করোনায় ধূমপায়ীদের মৃতের হার বেশি

ছোঁয়াচে করোনাভাইরাস জনিত কোভিড-১৯ রোগ বিশ্বে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। ধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে কোভিড-১৯-এর মরণ ছোবল অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি। এমনকি, যারা ধূমপায়ীদের আশেপাশে থাকেন, তাদেরও প্রায় একই রকম বিপদ। বিশ্বব্যাপী কয়েকটি সমীক্ষা ও গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।

এই পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ধূমপান ছেড়ে দিতে অনুরোধ করছেন। একই আবেদন জানিয়েছেন ‘ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল’।

চিনে কোভিড-১৯ তে আক্রান্ত মানুষদের মধ্যে ১০৯৯ জনকে নিয়ে একটি সমীক্ষা করে এর রিপোর্ট ‘দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন’-এ প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, অধূমপায়ীদের তুলনায় প্রায় তিনগুণ সংখ্যক ধূমপায়ী জটিল অবস্থায় ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে ভর্তি হয়েছেন। তাদের কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস চালাতে হয়েছে। তারপরও তাদের বেশির ভাগই মারা গিয়েছেন। ৭৮ জন জটিল কোভিড রোগীদের নিয়ে সমীক্ষা করে দেখা গেছে এদের অধিকাংশই ধূমপায়ী।

ইতালির স্বাস্থ্য গবেষণা এজেন্সি জানিয়েছে- কোভিড ১৯-এ মৃতদের মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশই পুরুষ। এবং তাদের অধিকাংশই ধূমপায়ী।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ হলে অধূমপায়ীদের তুলনায় ধূমপায়ীর অবস্থা জটিল হতে পারে প্রায় ১৪ গুণ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যিনি ধূমপান করছেন, তার শরীরে যদি ভাইরাস থাকে, তিনি যখন ধোঁয়া ছাড়বেন, সেই ধোঁয়ায় ভর করে ভাইরাসও ছড়িয়ে পড়বে আশপাশে। ওই অ্যারোসল বা বাতাসবাহীত লালার কণায় ভাইরাস বেঁচে থাকতে পারে ঘণ্টা তিনেক। কাজেই বদ্ধ ঘরে কাছাকাছি বসে ধূমপান করলে অন্যের মধ্যেও ছড়াবে ভাইরাস।

লাগাতার ধূমপানে ফুসফুসের রোগ ঠেকানোর ক্ষমতা কমে যায়। কারণ, ফুসফুসে ছোট ছোট চুলের মতো দেখতে সিলিয়া থাকে। সাধারণ অবস্থায় এরা ধুলোবালি, জীবাণু, সব কিছুকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করে। দীর্ঘ দিন ধরে ধূমপান করলে ফুসফুসে থাকা সিলিয়া অনেকটাই নিষ্ক্রিয় হয়ে যেতে পারে। তাই ধূমপায়ীদের মধ্যে যে কোনো ধরনের ফুসফুসের সংক্রমণ বেশি হয়।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on: