করোনার আক্রমণস্থল ফুসফুসের যত্ন নিন

করোনাভাইরাস মহামারীতে অচল গোটা বিশ্ব। হু হু করে বাড়ছে আক্রান্ত রোগী ও মৃতের সংখ্যা। এই অবস্থায় করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে এর উৎস, বিস্তার ও প্রতিরোধ নিয়ে বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এই ভাইরাসের মূল আক্রমণস্থল হচ্ছে- ফুসফুস। ভাইরাসটি নাক বা মুখ দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে ফুসফুসের স্বাভাবিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটায়। ফলে ধীরে ধীরে এর কার্যক্ষমতা নষ্ট করে রোগীকে শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ইত্যাদি জটিলতা, এমনকি মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। তাই ফুসফুসের যত্ন নেয়া জরুরী। কী করে যত্ন নেবেন পুষ্টিবিদ বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে থাকেন।

চলুন জেনে নিই, কিভাবে ফুসফুসের যত্ন নিতে হবে

ফুসফুসের যত্নে প্রথমেই বলতে হয় ধূমপান ত্যাগের কথা। ধূমপায়ীদের ফুসফুসের কোষ স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি দুর্বল থাকে। ফলে তাদের শ্বাসতন্ত্রের রোগ হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ধূমপায়ীদের করোনাভাইরাসের ‌‘অ্যাট রিস্ক' বা ঝুঁকিপূর্ণ গ্রুপ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। অর্থাৎ সাধারণ মানুষ অপেক্ষা ধূমপায়ীরা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

ফুসফুসের জন্য ভিটামিন-এ, সি, ই (বিটাক্যারোটিন ও ক্যারোটিনয়েডস), ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, সোডিয়াম, সেলেনিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামসমৃদ্ধ খাবার প্রয়োজন। গবেষকদের মতে, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অর্থাৎ ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি ও ভিটামিন-ই ফুসফুসের জন্য মহৌষধ। আদা, রসুন, রঙিন শাকসবজি, ফল, তৈলাক্ত মাছ, টক ফল, সরিষা, আমলকী, আপেল, কমলা, ব্রোকলি, ডিম, ফুলকপি ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে।

এসব অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার ফুসফুসের ক্ষতিগ্রস্ত কোষকে উজ্জীবিত করে, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস হ্রাস করে, সেল ড্যামেজ প্রতিরোধ করে এবং ফুসফুসের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে ফুসফুস তথা পুরো দেহের সুস্থতা নিশ্চিত করে।

একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন প্রতি কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ৩০ থেকে ৪৫ মিলিলিটার পানি প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ কারও ওজন ৬০ কেজি হলে তার দৈনিক পানির চাহিদা হবে ন্যূনতম ১ দশমিক ৮ থেকে ২ দশমিক ৭ লিটার। পর্যাপ্ত পানি পান করলে ডিহাইড্রেশন থেকে মুক্তির পাশাপাশি দেহ টক্সিনমুক্ত থাকবে এবং কোষকে উজ্জীবিত রাখতে সাহায্য করবে।

ফুসফুস ভালো রাখতে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো- নিয়মিত ব্যায়াম করা। ব্যায়াম করলে দেহে প্রচুর অক্সিজেন প্রবেশ করে এবং বারবার সম্প্রসারণ-প্রসারণের ফলে ফুসফুসের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়।

মোট কথা, ধূমপান না করা, নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ, ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত বিশ্রামে ফুসফুস ও সার্বিক স্বাস্থ্য ভালো থাকবে, যা শুধু করোনাই নয় যেকোনো ধরনের অসুস্থতা থেকেই আমাদের সুরক্ষা দেবে।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on: