কোরিয়ান ‘কিয়স্ক’ মডেলে বাংলাদেশে হবে করোনা টেস্ট

দেশে কোভিড-১৯ পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করতে দক্ষিণ কোরিয়ার ‘কিয়স্ক’ মডেলে বুথ বসানো হচ্ছে বাংলাদেশে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘জেকেজি হেলথ কেয়ার’র সহযোগিতায় রাজধানীতে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহের কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে করোনার নমুনা পরীক্ষার এই বুথ সারাদেশে স্থাপন করা হবে।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, দেশের অন্যান্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকেও আমরা এই উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা তাদের এই কাজকে উৎসাহিত করছি। সারাদেশে এভাবে বুথ বসানো গেলে করোনা নিয়ন্ত্রণ ও শনাক্তকরণ খুবই সহজ হয়ে যাবে।

আবুল কালাম আজাদ জানান, দক্ষিণ কোরিয়ার কিয়স্ক আদলে বুথের মাধ্যমে নমুনা সংগ্রহের কাজে জনবলও কম লাগে। এরই মধ্যে রাজধানীতে এনজিও জেকেজি হেলথ কেয়ার নামের একটি সংস্থা করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ শুরু করেছে।

তিনি আরও জানান, এই বুথে নমুনা সংগ্রহের পদ্ধতি অনেক নিরাপদ। কাজেই এই বুথ থেকে নমুনা সংগ্রহের সময় করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সুযোগ নেই। বুথে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত থাকবে এবং বারবার পিপিই বদলানোর প্রয়োজন পড়বে না।

এ ব্যাপারে জেকেজি হেলথ কেয়ারের আহ্বায়ক ড. সাবরিনা আরিফ বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার কিয়স্কির মডেলে করোনা পরীক্ষার জন্য এরই মধ্যে ৪৪টি নমুনা সংগ্রহ বুথ স্থাপন করা হয়েছে। আমরা আশা করছি, সোমবার থেকে কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ শুরু করতে পারবো।

ড. সাবরিনা আরও বলেন, রাজধানী ঢাকায় ৮টি, নারায়ণগঞ্জে ৮টি এবং বাকিগুলো অন্যান্য বিভাগে স্থাপন করা হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার কিয়স্কি’র মডেল অনুসরণ করে আমরা সারাদেশে এ ধরণের ৩২০টি বুথ স্থাপন করব।

বুথ সম্পর্কে ড. সাবরিনা আরিফ জানান, স্বাস্থ্যকর্মীরা যেখানে অবস্থান করেন সেখানকার পরিবেশ সবসময় জীবাণুমুক্ত রাখতে কাঁচে ঘেরা কেবিনের মতো দেখতে নমুনা সংগ্রহ বুথটি তৈরি করা হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা বুথের বাইরে দাঁড়ানো মানুষের শরীর থেকে করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করতে পারবেন। নমুনা সংগ্রহের সময় স্বাস্থ্যকর্মীরা আলাদা আলাদা গ্লাভস ব্যবহার করবেন।

এছাড়া প্রতিবার নমুনা সংগ্রহের পর গ্লাভস ও যে চেয়ারে বসিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, তা জীবাণুমুক্ত করা হবে। ফলে স্বাস্থ্য সুরক্ষার কোন ঘাটতি থাকবে না বলে জানান তিনি।

ডা. সাবরিনা আরিফ আরও বলেন, এই বুথগুলো স্থাপন করা হবে প্রত্যেক এলাকার স্কুল বা কলেজের মাঠে। নমুনা পরীক্ষার জন্য বারবার কাউকে হটলাইনে কল করতে হবে না। একজন ব্যক্তি নিজেই নমুনা পরীক্ষার জন্য বুথে যেতে পারবেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ জানুয়ারি থেকে করোনাভাইরাসে সন্দেহজনক সংক্রমিতদের পরীক্ষা শুরু করে আইইডিসিআর। মার্চ মাস পর্যন্ত দেশে শুধুমাত্র আইইডিসিআরেই কোভিড-১৯ এর পরীক্ষা করার সক্ষমতা ছিল। কিন্তু দেশে করোনা পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হওয়ায় ঢাকার আরও ৯টি স্থান এবং সারাদেশের পাঁচটি স্থানে করোনা পরীক্ষা শুরু করা হয়।

 

টাইমস/এসএন/এইচইউ

Share this news on: