বাদুড়ে থাকতে পারে ৩২শ ধরনের করোনাভাইরাস

বন্য বাদুড় সাধারণত বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে বাসকারী মানুষের জন্য উপকারী। এরা পরাগায়নে সহায়তা করে, ফসল নষ্টকারী কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ করে। অনেক অঞ্চলে কৃষকেরা গুহা থেকে বাদুড়ের বিষ্ঠা সংগ্রহ করে সার হিসেবে ব্যবহারের করেন।

তবে অনেক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই স্তন্যপায়ী প্রাণীরা মানুষের নানাভাবে উপকারী হলেও স্বাস্থ্যের জন্য উল্লেখযোগ্য হুমকি সৃষ্টিকারী বেশ কয়েকটি ভাইরাসের মূলহোতা।

এর মধ্যে রয়েছে ২০০২-২০০৩ সালে ছড়িয়ে পড়া সার্স ভাইরাস। ২০১২ সালে মধ্য প্রাচ্যে ছড়িয়ে যাওয়া মার্স ভাইরাস এবং সাম্প্রতিককালের কোভিড-১৯।

সার্স কোভিড-২ নামে যে করোনাভাইরাসের কারণে কোভিড-১৯ রোগটি হয়, তা বাদুড়ের শরীরে পাওয়া ভাইরাসের সঙ্গে প্রায় ৯৬ শতাংশ মিলে যায়। এ কারণে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, রোগটি বাদুড় থেকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে থাকতে পারে।

২০১৭ সালের একটি সমীক্ষায় অনুমান করা হয়েছে, বাদুড় ৩,২০০ ধরনের করোনাভাইরাসের উৎস হতে পারে, যার বেশিরভাগই অনাবিষ্কৃত রয়েছে।

সম্প্রতি পিএলওএস ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত মায়ানমারে পরিচালিত একটি সমীক্ষায় বাদুড়ের ছয়টি নতুন করোনাভাইরাস চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

পরীক্ষার উদ্দেশ্যে ২০১৬ মে মাস থেকে ২০১৮ সালের আগস্ট পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা বাদুড় ধরে লালার নমুনা নিয়ে তারপর সেগুলি ছেড়ে দেন, এছাড়াও গুহা থেকে তারা বাদুড়ের বিষ্ঠা সংগ্রহ করেছেন।

অতঃপর পরীক্ষাগারে তারা ৭৫০টিরও বেশি বাদুড় থেকে প্রাপ্ত করোনাভাইরাসের আরএনএ সিকোয়েন্সের সঙ্গে পূর্বে শনাক্ত করোনাভাইরাসের তুলনা করে নতুন ছয়টি করোনাভাইরাস সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন।

তবে গবেষকরা বলছেন, সদ্য আবিষ্কৃত করোনাভাইরাস সমূহের সঙ্গে সার্স, মার্স ও কোভিড-১৯ এর তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। নতুন ভাইরাসগুলিতে মানুষের গুরুতর অসুস্থতার সম্ভাবনা আছে কিনা তাও তারা এখনও জানেন না।

স্মিথসোনিয়ানের গ্লোবাল হেলথের পরিচালক সুজান মারে এ বিষয়ে বলেন, “অনেকগুলি করোনাভাইরাস মানুষের জন্য হুমকির কারণ নাও হতে পারে। তবে যেহেতু প্রাণীদের মধ্যে এই রোগগুলি শনাক্ত করা গেছে, তখন মানুষের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়তে পারে কিনা তা খতিয়ে দেখার একটি মূল্যবান সুযোগ তৈরি হয়েছে।”

গবেষকরা বেশিরভাগ করোনাভাইরাসের নমুনা বাদুড়ের বিষ্ঠায় খুঁজে পেয়েছেন। যা থেকে ধারণা করা হচ্ছে, কৃষিক্ষেত্রে বাদুড়ের বিষ্ঠার ব্যবহার প্রাণীটি থেকে মানুষের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভাইরাল সংক্রমণ রুট হতে পারে। ফলে যারা এটি সংগ্রহ করেন এবং সার হিসেবে ব্যবহার করেন তাদের জন্য এটি একটি বিশেষ স্বাস্থ্য হুমকি।

গবেষকরা অনুমান করছেন যে, বাড়তে থাকা সংক্রামক রোগগুলির প্রায় ৬০-৭৫ শতাংশ জুনোটিক ডিজিজ বা প্রাণী থেকে মানুষে সংক্রমিত। এর মধ্যে ৭০ ভাগের বেশি বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর প্রজাতি যেমন বাদুড় থেকে উদ্ভূত হয়েছে। তথ্যসূত্র: মেডিক্যাল নিউজ টুডে

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ইউসিবির সঙ্গে একীভূত না হওয়ার সিদ্ধান্ত ন্যাশনাল ব্যাংকের Apr 28, 2024
img
চমক রেখে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের শক্তিশালী দল ঘোষণা Apr 28, 2024
img
ঢাকা-রাজশাহীসহ ৫ জেলায় সোমবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ Apr 28, 2024
রহস্যময় MKS-ব্যাট দিয়ে খেললেই ব্যাটাররা পাবে বেশি বেশি চার-ছক্কার দেখা! Apr 28, 2024
টায়ার থে'রাপিতে তৈরি হচ্ছেন পেসার নাহিদ রানা Apr 28, 2024
img
পদ্মা সেতুতে দেড় হাজার কোটি টাকা টোল আদায়ের মাইলফলক Apr 28, 2024
তাপপ্রবাহের মধ্যে স্কুল খোলায় অসন্তুষ্ট অভিভাবকরা Apr 28, 2024
অপু, বুবলিকে বাদ দিয়ে কবে কখন তৃতীয় বিয়ে করছেন শাকিব খান ? Apr 28, 2024
হাথুরুর আমলে টিকতে পারবেন তো নতুন স্পিন কোচ মুশতাক আহমেদ? Apr 28, 2024
img
এপ্রিলের ২৬ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৬৮ কোটি ডলার Apr 28, 2024