পৃথিবী থেকে নভেল করোনাভাইরাস 'হয়তো কখনোই নির্মূল হবে না’ বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এইচআইভি ভাইরাসের মতো কোভিড-১৯ রোগ সৃষ্টিকারী করোনা স্থানীয় ভাইরাস হয়ে যেতে পারে বলে আভাস দিয়েছে সংস্থাটি।
বুধবার করোনা ভাইরাস কবে নির্মূল হতে পারে সে বিষয়ে ধারণা প্রকাশ করার ব্যাপারেও সতর্ক করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইমার্জেন্সি বিষয়ের পরিচালক ডা. মাইক রায়ান।
জেনেভার ভার্চুয়াল প্রেস কনফারেন্সে ডা. রায়ান বলেন, এই ভাইরাসটি আমাদের জাতিগত রোগ হিসেবে আমাদের সাথেই থাকতে পারে এবং হয়তো কখনোই শতভাগ নির্মূল হবে না। এইচআইভি'ও নির্মূল হয়নি। কিন্তু আমরা ঐ ভাইরাসের সাথে সহাবস্থান অর্জন করতে পেরেছি।
ডা রায়ান আরো বলেন, ‘এই ভাইরাস কবে নির্মূল হবে' সেই ধারণা যে কেউ করতে পারে - তাও বিশ্বাস করতে চান না তিনি।
এছাড়া ভাইরাসটির প্রতিষেধক যদি পাওয়াও যায়, তবুও এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করার জন্য 'ব্যাপক প্রচেষ্টা' চালাতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বিশ্বে সম্ভাব্য ১০০ ভ্যাকসিনের উন্নয়ন ঘটানো হচ্ছে। এর মধ্যে কিছু ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা চলছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বুঝতে পারছেন, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর ভ্যাকসিন খুঁজে পাওয়া কষ্ট। রায়ান বলেন, হামের মতো অসুখের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন পাওয়া গেলেও তা পুরোপুরি নির্মূল হয়নি।
সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাসচিব টেড্রোস ঘেব্রেয়েসাস বলেন, এর গতিপথ আমাদের হাতে এবং এটি আমাদের সবার মাথাব্যথা। এই মহামারি থামাতে আমাদের সবার অবদান গুরুত্বপূর্ণ।
চলাফেরায় নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে নিলে দ্বিতীয় দফা সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যায় সতর্ক করে সংস্থাটির মহাসচিব বলেন, অনেক দেশই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ শিথিল করতে চাইবে। কিন্তু আমাদের সুপারিশ, এখনও যে কোনো দেশকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকা উচিত।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রোগতত্ববিদ মারিয়া ভ্যান কারখোভ ব্রিফিংয়ে বলেন, এই মহামারি পরিস্থিতি থেকে বের হতে আমাদের সময় লাগবে, আমাদের মানসিকভাবে এর জন্য প্রস্তুত হওয়া উচিত।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তারা এমন সময় এই মন্তব্য করলেন যখন বিভিন্ন দেশ পর্যায়ক্রমে তাদের লকডাউনের কড়াকড়িতে শৈথিল্য আনছে এবং আরো অনেক দেশের নেতাই তাদের নিজ নিজ অর্থনীতি উন্মুক্ত করে দেয়ার চিন্তা করছে।
এখন পর্যন্ত সারাবিশ্বে ৪৩ লাখের বেশি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং প্রায় তিন লাখ মানুষ মারা গেছে। সূত্র: বিবিসি বাংলা
টাইমস/এইচইউ