রক্তের টি-সেল বাড়িয়ে কোভিড-১৯ রোগী চিকিৎসার সম্ভাবনা

কোভিড-১৯ রোগের চিকিৎসায় একটি কার্যকরী ভ্যাকসিন ঠিক কখন পাওয়া যাবে সেটি এখনও পরিষ্কার নয়। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাস প্রতিরোধে ভ্যাকসিন ও প্রতিষেধক আবিষ্কারের চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের গবেষণায় কখনো আলো দেখা গেলেও তা পরে আর প্রজ্বল হয়নি।

এবার ব্রিটেনের একদল বিজ্ঞানী করোনাভাইরাসে সংক্রমিত গুরুতর রোগীদের চিকিৎসায় নতুন একটি পথের সন্ধান পেয়েছেন। তারা ভাবছেন, শরীরের টি-সেল বাড়িয়ে গুরুতর কোভিড-১৯ রোগীকে সারিয়ে তোলা যেতে পারে। খবর : বিবিসি

টি-সেল কী: লিম্ফনোড, টনসিল, প্লিহায় তৈরি হওয়া শ্বেত রক্তকণিকা শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরিতে সাহায্য করে। এগুলোকে বলে লিম্ফোসাইট। টি-সেল এক ধরনের লিম্ফোসাইট। এটি গলার থাইমাস গ্রন্থিতে তৈরি হয় বলে এর এমন নাম।

ওই বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, মানুষের শরীরের টি-সেল নামের যে বিশেষ কোষ রয়েছে, তা দেহকে সংক্রমণমুক্ত করার কাজ করে। গুরুতর করোনা রোগীর শরীরে এই কোষের সংখ্যা খুবই কম। এই টি-সেল বাড়ানোর ওষুধ করোনা চিকিৎসায় কাজ করে কি না তা দেখবেন তারা।

‘ইন্টারলিউকিন-৭’ নামের একটি ওষুধ শরীরের টি-সেল বাড়াতে সাহায্য করে। এবার ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা হবে, এই ওষুধ কোভিড-১৯ নিরাময়ে কতটুকু কার্যকর।

ফ্রান্সিস ক্রিক ইন্সটিটিউট, কিং’স কলেজ লন্ডন এবং গাই’জ ও সেন্ট টমাস হাসপাতালের বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকরা এই গবেষণাটি করছেন। হাসপাতাল দুটির সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মনুশঙ্কর হরি এই গবেষণায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

ক্রিক ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক আড্রিয়ান হেডে বলেন, ‘টি-সেলগুলোর অবস্থা দেখে আমরা অবাক হয়েছি। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর কথা যাদের, তাদের সংখ্যাই নাটকীয়ভাবে কমে যাচ্ছে কোভিড-১৯ গুরুতর আক্রান্তদের শরীরে।’

অধ্যাপক আড্রিয়ানের তথ্যমতে, একজন সুস্থ ব্যক্তির এক মাইক্রোলিটার (০.০০১ মিলিলিটার) রক্তে ২০০০ থেকে ৪০০০ টি-সেল থাকে। আর কোভিড-আক্রান্তদের অনেকের ক্ষেত্রে তা ২০০ থেকে ১২০০-তে নেমে যাচ্ছে। তবে এদের সংখ্যা কেন ও কীভাবে কমছে, সেটা এখনো স্পষ্ট নয়।

টি-সেলের সংখ্যা কমার তথ্যটি বর্তমানে একটা ধারণা মিলছে যে, কারও ক্ষেত্রে রোগটি মারাত্মক আকার নিতে চলেছে কি না। এবং টি-সেল বাড়িয়ে হয়তো গুরুতর অসুস্থদের সারিয়ে তোলা সম্ভব হবে, এমন আশা তৈরি হয়েছে।

সংবাদ মাধ্যমের তথ্য, ইন্টারলিউকিন-৭ ওষুধটি এ পর্যন্ত অল্প সংখ্যক সেপসিস রোগীর ওপর পরীক্ষা করা হয়েছে। এবং নিরাপদে তাদের শরীরে টি-সেলের সংখ্যা বাড়ানো গেছে। ওষুধটি দিয়ে কোভিড-১৯ আক্রান্তদের ক্ষেত্রেও সে কাজটা করা যায় কি না, সেটার ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা হবে এবার।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on: