করোনা দুর্বল হয়নি এখনো শক্তিশালী

করোনাভাইরাস নিয়ে নানা আতঙ্কের মধ্যেই সম্প্রতি সুখবর দিয়েছিলেন ইতালির দুই চিকিৎসক। তারা দাবি করেছিলেন, এই ভাইরাস আগের মতো আর শক্তিশালী নেই। এই ভাইরাস দিন দিন শক্তি হারিয়ে দুর্বল হচ্ছে। কিন্তু এর জবাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, হুট করে এ ভাইরাস ক্ষতিকর ক্ষমতা হারিয়ে নির্বিষ হয়ে গেছে- এমন কোনো প্রমাণ নেই।

ডব্লিউএইচও’র এপিডিমিওলজিস্ট মারিয়া ফন কেরকোভে এবং আরও কয়েকজন ভাইরাস ও সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ বলেছেন, ইতালির চিকিৎসকদের বক্তব্যের কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। আমাদের সাবধান হওয়া দরকার। এটি এখনও একটি খুনে ভাইরাস।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞরা বলেন, সংক্রমণের ধরনে অথবা রোগের তীব্রতার দিক থেকে নতুন করোনাভাইরাস উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে- এমনটি বলার মতো কোনো উপাত্ত এখনও মেলেনি।

ফন কেরকোভে জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেন, সংক্রমণের সক্ষমতার দিক থেকে এর (ভাইরাস) কোনো পরিবর্তিত হয়নি। তীব্রতার দিক থেকেও এটি বদলায়নি। ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর পরিবর্তন এবং নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেয়ার বিষয়টি নতুন কিছু নয়। তবে নতুন এই ভাইরাসের শক্তি কমার কোনো লক্ষণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞরা দেখছেন না।

এর আগে রোববার ইতালির মিলান শহরের সান রাফায়েলে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা বিভাগের প্রধান আলবের্তো জাঙ্গরিল্লো এবং জেনোয়া শহরের সান মার্তিনো হাসপাতালের সংক্রামক রোগ ক্লিনিকের প্রধান মাত্তেও বাসেসত্তি দাবি করেন, করোনা তার শক্তি হারাচ্ছে এবং এটি এখন আর তেমন প্রাণঘাতীও নয়।

লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের সংক্রামক রোগের অধ্যাপক মার্টিন হিবার্ড রয়টার্সকে বলেন, কোভিড-১৯ এর জন্য দায়ী করোনাভাইরাসের জিনগত পরিবর্তনগুলো বুঝতে গুরুত্বপূর্ণ যে গবেষণাগুলো এ পর্যন্ত হয়েছে, তাতে এমন কিছু পাওয়া যায়নি, যাতে বলা যায় যে এটি কোনো দিক দিয়ে দুর্বল হয়েছে বা এখন তা ‘কম মারাত্মক’।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়, ওয়েক ফরেস্ট ব্যাপটিস্ট মেডিকেল সেন্টার, জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় এবং নর্থওয়েল হেলথের বিশেষজ্ঞ ও প্রতিনিধিরা বলছেন, তারাও এমন কোনো প্রমাণ পাননি যাতে বলা যায় ভাইরাসটি বদলে গেছে।

জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্য অধ্যাপক লিয়ানা ওয়েন বলেন, ইতালীয় চিকিৎসকের পরামর্শটি সম্ভবত বিপজ্জনক, কারণ কোনো প্রমাণ ছাড়াই মিথ্যা আশ্বাস দেয়া হয়েছে।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on: