কোভিড-১৯ আক্রান্ত ছিলেন জর্জ ফ্লয়েড, তবে মৃত্যুর কারণ আলাদা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যার একাংশ বর্তমানে জর্জ ফ্লয়েড হত্যা ও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে উত্তাল এবং এই বিক্ষোভ সহিংস রূপ ধারণ করেছে। এরই মধ্যে প্রকাশিত হলো ফ্লয়েডের ফাইনাল অটোপসি রিপোর্ট। যা থেকে জানা যাচ্ছে এপ্রিলে জর্জ ফ্লয়েড কোভিড-১৯ রোগটিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তবে এই রোগটির জন্য তার মৃত্যু হয়নি।

কাউন্টির প্রধান মেডিক্যাল পরীক্ষক অ্যান্ড্রু বেকার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, ফ্লয়েডের নাক থেকে সংগ্রহ করা নমুনা পরীক্ষা করে তার দেহে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। তবে, করোনা ভাইরাসের কারণে তার মৃত্যু হয়নি।

হেপিন কাউন্টি মেডিক্যাল এক্সামিনার কর্তৃক প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে- জর্জ ফ্লয়েড কার্ডিওপালমোনারি অ্যারেস্ট বা হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। ফ্লয়েড হত্যার ভিডিওতে দেখা গেছে, তার গলার উপর হাঁটু দিয়ে চেপে ধরে রেখেছেন একজন পুলিশ সদস্য। তার বলা শেষ কথা ছিল, “আমি নি:শ্বাস নিতে পারছি না ম্যান।” এছাড়াও রিপোর্টে একে ‘হোমিসাইডি’ বা ‘অন্য কারও হাতে নিহত’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

একজন পুলিশ সদস্য প্রায় আট মিনিট হাঁটু দিয়ে ফ্লয়েডের গলা চেপে রাখার ফলে তার শ্বাস কার্য ব্যাহত হয়েছিল বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে, ফ্লয়েডের গলায় হাঁটু দিয়ে চাপা দেয়ার ফলেই তার মৃত্যু হয়েছে রিপোর্টে এমনটি সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি।

রিপোর্টে আরও বলা হয় ফ্লয়েডের নাক, মুখ, গলা, ঘাড়, হাত ও পায়ে আঘাত এবং ক্ষত চিহ্ন পাওয়া গেছে। কিন্তু এসব আঘাতেই তার মৃত্যু হয়েছে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাছাড়া তার গলা, মাথার খুলি বা মস্তিষ্কে বড় ধরণের কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ফ্লয়েড উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগে আক্রান্ত ছিলেন। এছাড়াও ফ্লয়েডের রক্তে গাঁজা, মরফিনসহ বিভিন্ন ধরণের ড্রাগের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। তবে, ড্রাগের উপস্থিতি নিশ্চিত করার পরীক্ষা পদ্ধতিটি নিয়ে সন্দেহ রয়ে গেছে।

অন্যদিকে, ফ্লয়েডের পরিবার এই রিপোর্টটি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে ফ্লয়েডের কোনো হৃদরোগ ছিল না। ফ্লয়েডের পরিবার কর্তৃক নিয়োগকৃত বেসরকারি মেডিক্যাল এক্সপার্ট বলছেন, গলায় অতিরিক্ত চাপ থেকে সৃষ্ট শ্বাসকষ্ট থেকেই মারা গেছেন ফ্লয়েড।

উল্লেখ্য, ২৫ মে যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের বড় শহর মিনিয়াপলিসে পুলিশের হাতে জর্জ ফ্লয়েড নামে এক কৃষ্ণাঙ্গ নির্মমভাবে নিহত হন। পরবর্তীতে সোশ্যাল মিডিয়ায় পুলিশ সদস্যদের বর্ণবাদী এই অত্যাচারের ভিডিও ভাইরাল হয়ে পড়লে যুক্তরাষ্ট্রে একদল মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তথ্যসূত্র: সিএনএন

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on: