যেভাবে কাটছে কোভিড-১৯ আক্রান্ত মাশরাফির দিন

ক্রিকেট নিয়ে ছোটাছুটি, ফিটনেস নিয়ে তৎপরতা এবং এলাকার মানুষের জন্য প্রাণান্ত করা; আপাতত এসব কাজ থেকে নিজেকে সশরীরে সরিয়ে নিতে হয়েছে নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজাকে।

কারণ, সারা বিশ্ব কাঁপিয়ে ফেলা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক এই অধিনায়ক। বর্তমানে তিনি ঘরেই আইসোলেশনে রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ বি এম আব্দুল্লাহর তত্ত্বাবধানে চলছে তার চিকিৎসা ব্যবস্থা।

অবশ্য শরীরের ওপর কোনো আক্রমণে কাবু হওয়ার মানুষ তো মাশরাফি নন। দুই পায়ে সাতটাসহ শরীরে মোট ১১টা অপারেশন দগদগ করছে। তাই নিয়ে ক’দিন আগেও সমানে মাঠ মাতিয়ে বেড়াচ্ছেন। ফলে করোনার আক্রমণে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছেন, এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। শুধু নিয়ম অনুযায়ী নিজেকে ঘরে আটকে রেখেছেন এবং চিকিৎসকদের পরামর্শ শুনছেন। এছাড়া ফোনে, ফেসবুকে, হোয়াটসঅ্যাপে সব কাজ চলছে তার গতিতে।

বর্তমানে তার ঘুম কম হচ্ছে। সেটাতেও তিনি বেশ খুশি। কারণ, ইউরোপে করোনাকে পাশে ঠেলে লা লিগা আর ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের খেলা শুরু হয়েছে। নানান চাপে গত কিছুকাল আর সব ম্যাচ দেখা হচ্ছিল না। এখন আর কোনো বাছবিচার নেই। টিভিতে খেলা দেখালেই রাত জেগে ইউরোপিয়ান ফুটবল দেখছেন।

ভোর রাতে ফজরের নামাজ পড়ে দিন মাশরাফির শুরু হয়। এরপর ছোট্ট একটু নিদ্রা। তারপর উঠে নাস্তার পর স্ত্রীর কঠোর শাসনে নানারকম ভেষজ খাবার যেমন মালটা, আপেল, কমলা; ভিটামিস ‘সি’ গ্রহণের চেষ্টা। খাবার নিয়ে কখনোই খুব ভাবনা করার মানুষ তিনি। কিন্তু ইদানিং স্ত্রী আর বন্ধুদের চাপে জোর করেই যেন পুষ্টিকর খাবার খেতে হচ্ছে। সঙ্গে গরম পানির গার্গল আর বারবার আদা-চা খেতে হচ্ছে।

মাশরাফির এজমার সমস্যা আছে অনেক আগে থেকেই। তাই ডাক্তাররা পাঠিয়েছিলেন কিছু পরীক্ষা করাতে। বিশেষ করে বুকের এক্স-রে নিয়ে ডাক্তাররা ভাবিত ছিলেন। সুখবর হলো- বুকের এক্স-রে খুব ভালো এসেছে।

মাশরাফি করোনা নিয়ে ভাবতে চান না। কারো সাথে গল্প করতে গিয়েও করোনা প্রসঙ্গ এলে এড়িয়ে যান। এমনকি টিভিতেও এই প্রসঙ্গ এলে চ্যানেল বদলে ফেলেন। নিজেকে এই ভাইরাসের চিন্তায় মশগুল হতে দিতে চান না।

তার অবশ্য সময় কাটানো খুব সমস্যা হচ্ছে না। হুমায়রা ও সাহেল; দুই সন্তানকে শুরুতেই নড়াইলের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। সতর্কতা হিসেবে তাদের পরীক্ষাও করানো হয়েছে। ফল নেগেটিভ এসেছে। এটা বেশ স্বস্তি দিয়েছে। মাশরাফির সঙ্গী হিসেবে সার্বক্ষণিক পাশে আছেন স্ত্রী সুমনা হক সুমী। খাওয়া, ওষুধ থেকে শুরু করে সবকিছুই তিনি নিয়ন্ত্রণ করছেন। করোনা তাকে পাশ থেকে সরাতে পারেনি।

সরাতে পারেনি বন্ধু প্রীতম বা বাবলুকেও। তারাও আছেন বাসায়। সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রেখেছেন মাশরাফিকে।

নড়াইলে যে বিশাল কর্মযজ্ঞ, তাও থেমে নেই। আছে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। সেখানে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ চলছে। যোগাযোগ চলছে নড়াইলের ডিসি, এসপির মতো কর্মকর্তাদের সাথেও। এখন কেবল অপেক্ষার পালা। আবার দ্রুত যেনো সশরীরে ফিরে আসতে পারেন মানুষের পাশে।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ