ঘরে বসে মহামারী সম্পর্কিত যেসব মুভি দেখতে পারেন

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া কোভিড-১৯ মহামারীর ফলে ইতিমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন বহু লোক, সংক্রমণের সংখ্যাও প্রতিদিন বেড়েই চলেছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বহু দেশে দেখা দিয়েছে দ্বিতীয় পর্যায়ের মহামারী। দীর্ঘ দিনের লকডাউন, স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকা, ব্যবসায় ধস, ক্যারিয়ার নিয়ে শঙ্কা প্রভৃতি নানা কারণে সাধারণ মানুষের দিন কাটছে আতঙ্ক আর উদ্বেগের মধ্য দিয়ে।

এই অবস্থায় স্বাভাবিকভাবে অনেকে নিজেকে ঘরের মধ্যে আটকে রেখেছেন, অপেক্ষা করছেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার। দীর্ঘদিন ঘরে আটকে থেকে ভুগছেন নানা মানসিক অশান্তিতে। এই অবস্থায় অনেকে হালকা বিনোদনের মধ্য দিয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে চেষ্টা করছেন, আবার অনেকে বিভিন্ন ধরণের বিপর্যয় সংক্রান্ত মুভি বা সিনেমা দেখে নিজের ভয়কে হালকা করতে চাইছেন।

মহামারী সংক্রান্ত এমন কিছু মুভি বা সিনেমা আছে যা এই পরিস্থিতিতে আপনি চাইলে দেখতে পারেন। আজকে আমরা এমন কিছু মুভি নিয়েই আলোচনা করবো।

আউটব্রেক (১৯৯৫)
এই সিনেমায় যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের একটি ছোট শহরের গল্প দেখানো হয়েছে। শহরটিতে ক্যাপাচিন মাংকির স্টেম থেকে ইবোলা ভাইরাসের সমগোত্রীয় একটি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে সমগ্র শহরটিকে কোয়ারেনটাইনে রাখা হয়। গল্পটি মূলত সংক্রমণ রোধ ও সংক্রমিতদের সেবায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মী ও সামরিক সদস্যদের ঘিরে তৈরি করা হয়েছে।

টুয়েন্টি এইট ডে লেটার (২০০২)
ড্যানি বয়লের দুর্দান্ত একটি জম্বি থ্রিলার টুয়েন্টি এইট ডে লেটার। ছবিটিতে দেখা যায়, যুক্তরাজ্য জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে অজানা এক ভাইরাস। ভাইরাসটির সংক্রমণের ফলে সাধারণ মানুষ ধীরে ধীরে পরিণত হচ্ছে রক্ত পিপাসু উন্মাদে। এমন এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে বেঁচে যাওয়া কিছু লোক মহামারী পরবর্তী সময়ের সাথে মানিয়ে নেয়ার জীবন যুদ্ধে লিপ্ত। এটি একটি পোস্ট অ্যাপোক্যালিপ্টিক পলিটিক্যাল অ্যালিগরি।

ক্যারিয়ার্স (২০০৯)
এই সিনেমাটিও মহামারী সংক্রান্ত। গল্পে দেখা যায়, কয়েকজন বন্ধু প্লেগের হাত থেকে বাঁচতে প্লেগ মুক্ত অঞ্চলে যেতে চাইছে, যেখানে তারা প্লেগ মহামারী শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। কিন্তু যাত্রাপথে দলটির সাথে একজন ভদ্রলোক ও তার প্লেগ আক্রান্ত মেয়ের দেখা হয়। দুঃখজনকভাবে মেয়েটির থেকে প্লেগের জীবাণু নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে থাকা দলটির একজন সদস্যের দেহে ছড়িয়ে পড়ে। তারপর কী হলো জানতে মুভিটি দেখতে হবে। এটি একটি ধীর গতির ড্রামাটিক মুভি।

কনটেইজন (২০১১)
এই মুভিতে চিত্রিত পরিস্থিতির সাথে আপনি বর্তমান পরিস্থিতির বেশ কিছু মিল খুঁজে পেতে পারেন। হংকং থেকে এক সফর শেষে ফেরার পর বেথ অ্যামহফ অজানা একটি ফ্লু জাতীয় রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। একইদিন তার বড় ছেলেও রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে জীবনঘাতি রোগটি ছড়িয়ে পড়তে থাকে। তবে ডাক্তার বা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের এটি বুঝে উঠতে বেশ কিছুদিন লেগে যায়। এর মধ্যে রোগটি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে আর দেখা দেয় বৈশ্বিক মহামারী।

ফ্লু (২০১৩)
নাম শুনেই নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন এই সিনেমার গল্প ফ্লু’য়ের মহামারীর উপর ভিত্তি করে এগিয়ে গেছে। এই সাউথ কোরিয়ান সিনেমার গল্প গড়ে উঠেছে জীবনঘাতি এক ভাইরাসকে কেন্দ্র করে, যাতে আক্রান্ত হলে ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যু নিশ্চিত। ভাইরাসের মহামারীর ফলে গোটা শহর কোয়ারেন্টাইন করা এবং নাগরিকদের নানা বিড়ম্বনার গল্পও এতে রয়েছে।

লাস্ট ডে’স (২০১৩)
এই সিনেমাটিও সামাজিক দূরত্ব আর মহামারীর গল্প রয়েছে। লাস্ট ডে’স সিনেমায় বর্ণিত সময় ও সমাজের পরিস্থিতি এমন যেখানে বাড়ির বাইরে যাওয়া মানেই নিশ্চিত মৃত্যু। এমন পরিস্থিতিতে নিজের গার্লফ্রেণ্ডকে খুঁজে বের করতে নিরাপদ আশ্রয় ছেড়ে বিপদের ঝুঁকি নিয়ে ঘর ছেড়ে মুক্ত পৃথিবীতে বেড়িয়ে আসবেন একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তারপর কী হলো? নিজেই দেখে নিন।

ভাইরাস (২০১৯)
এই ছবিটি মূলত ইন্ডিয়াতে ছড়িয়ে পড়া নিপাহ ভাইরাসের মহামারীকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে। নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত প্রায় ৭৫% লোকই মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়েছিল। তবে, এই সিনেমাটির মূল গল্প ভাইরাসটির ছড়িয়ে পড়া রুখতে একটি ছোট কমিউনিটির লড়াইকে কেন্দ্র করে এগিয়ে গেছে। তথ্যসূত্র: ফিল্ম স্কুল রিজেক্টস ডট কম

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ