বাচ্চার বধিরতার কারণ

মানুষ তিনভাবে শিখে- দেখে, শুনে আর ঠেকে। যদি জন্মের সময় থেকেই কানে শোনার অসুবিধে হয় তাহলে কথা শিখবে কীভাবে! বর্তমান করোনার ভয়ে তো আমরা এই সমস্যার কথা প্রায় ভুলতে বসেছি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতি ১০০ জন শিশুর মধ্যে ৪ জন স্বাভাবিক ভাবে শুনতে পায় না। অথচ বাবা মা বা বাড়ির অন্যরা খেয়াল করেন না বা ডাক্তারকে জানান না বলে ধরা পড়ে না। আর এর ফলে বাচ্চার কথা বলার সমস্যা হয়।

গর্ভাবস্থায় হবু মায়ের কিছু অসুখ বিসুখ এবং কানের গঠনগত কিছু ত্রুটি বিচ্যুতি থাকলে বাচ্চার শ্রবণক্ষমতার সম্পূর্ণ ব্যবস্থাপনায় নানা ত্রুটি দেখা যেতে পারে। যেসব কারণে বাচ্চার জন্মগত শ্রবণক্ষমতার সমস্যা হতে পারে সেগুলি হলো-

  • যিনি মা হতে চলেছেন তার যদি মাম্পস, রুবেলা, হারপিস, চিকেন পক্স বা টক্সোপ্লাসমোসিসের মতো ভাইরাস ঘটিত সংক্রমণ হয় তাহলে শিশুর জন্মগত হিয়ারিং লসের ঝুঁকি থাকে।
  • গর্ভাবস্থায় হবু মা কোনো ওষুধ খেলে তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া হিসেবে বাচ্চার শ্রবণ সংক্রান্ত নার্ভ বা সম্পূর্ণ সিস্টেমের ত্রুটি থাকতে পারে।
  • কান বা শ্রবণযন্ত্রের, বিশেষ করে অন্তঃকর্ণের গঠনগত কোনো ত্রুটি থাকলে জন্মগত বধিরতার সম্ভাবনা প্রবল।
  • অডিটরি নার্ভের কাছে কোনো টিউমার থাকলে সমস্যা হয়।
  • গর্ভাবস্থায় হবু মায়ের চোট লাগলে শিশুর শ্রবণযন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

চলুন জেনে নেই, কানে শুনতে অসুবিধা হয় কেন

  • নির্ধারিত সময়ের আগে অথবা স্বাভাবিকের থেকে কম ওজন নিয়ে জন্মালে বাচ্চার শ্রবণতন্ত্রের গঠনগত ত্রুটি থাকতে পারে।
  • কোনো কারণে কানের পর্দা ক্ষতিগ্রস্ত হলে এবং সময়মতো চিকিৎসা না হলে বাচ্চার কানে শোনার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়।
  • শোনার সমস্যার সব থেকে চেনা কারণ ঠান্ডা লেগে একাধিক বার সর্দি কাশি। এর ফলে নাক ও কানের সংযোগকারী ইউস্টেশিয়ান টিউবে সর্দি জমে কানের শোনার ক্ষমতা কমে যেতে পারে।
  • কানে কিছু ঢুকে গেলে ও তা বের না করা হলে শ্রবণযন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
  • মেনিনজাইটিস বা এই ধরনের কোনো সংক্রমণ হলে কান ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
  • কানে ময়লা জমে ও খোঁচাখুঁচি করতে গেলে কানের পর্দা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ফলে শোনার ক্ষমতা ধীরে ধীরে লোপ পায়।

কখন টেস্ট করানো দরকার
ডাকলে বা জোরে শব্দ হলে বাচ্চা চমকে উঠলে বা ভয় পেয়ে কাঁদলে সমস্যা নেই। কিন্তু যদি কোনও শব্দেই সে রিঅ্যাক্ট না করে, বুঝতে হবে সমস্যা আছে। ১২-১৫ মাস বয়সে বাচ্চারা মা, বাবা, দাদা ইত্যাদি বলতে শেখে। না বলতে পারলে বুঝতে হবে, সমস্যা আছে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই নিওনেটাল হিয়ারিং স্ক্রিনিং করা উচিৎ। জন্মের সময়ই এই পরীক্ষাগুলি করিয়ে নিলে ভালো হয়। এই পরীক্ষাগুলি যন্ত্রণাহীন এবং উচ্চ প্রযুক্তির যন্ত্রপাতির সাহায্যে করা হয় এবং দ্রুত রোগ নির্ণয় করা যায়। সুতরাং কোনো সন্দেহ হলে অবশ্যই ডাক্তার দেখানো উচিৎ।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on: