থাইরয়েড সমস্যা সমাধানে সহায়তা করবে যেসব খাবার

থাইরয়েড হচ্ছে গলার গোঁড়ায় প্রজাপতি আকৃতির একটি ছোট গ্রন্থি। এটি মূলত আমাদের শরীরে থাইরয়েড হরমোন নিঃসরণ ঘটিয়ে থাকে। এই হরমোন দেহের বিপাকীয় হারকেও প্রভাবিত করে এবং শক্তি উত্পাদনে ভূমিকা রাখে।

এছাড়াও এই হরমোন চুলের বৃদ্ধি, শরীরের তাপমাত্রা, ওজন, হার্ট রেট বজায় রাখতে এবং উর্বরতা ও মস্তিষ্কের বিকাশের পাশাপাশি মেজাজকেও প্রভাবিত করে। তবে যখন থাইরয়েড গ্রন্থিটিতে সমস্যা দেখা দেয় বা এটি সঠিকভাবে কাজ করে না (হাইপোথাইরয়েডিজম) বা অতিরিক্ত হরমোন তৈরি করে (হাইপারথাইরয়েডিজম) তখন বিভিন্ন দৈহিক সমস্যা দেখা দেয়। তবে পুষ্টি ও খাদ্যগ্রহণ এবং জীবনধারাতে ছোট-খাটো পরিবর্তন থাইরয়েড নিরাময়ে সহায়তা করতে পারে।

আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা যখন সঠিকভাবে কাজ করে না বা অটোইমিউন ডিজিজ দেখা দেয় তখন এটি স্বীয় শরীরের কোষকে আক্রমণ করতে শুরু করে। যখন এটি আমাদের থাইরয়েড আক্রমণ করে তখন হাশিমোটো রোগ দেখা দেয়।

এটি কি খাদ্যাভ্যাসের সাথে সম্পর্কযুক্ত?

অটোইমিউন ডিজিজের পেছনে বিভিন্ন জেনেটিক উপাদান দায়ী। তবে পরিবেশ এবং জীবনযাত্রার ধারা এর লক্ষণগুলিকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। তবে স্ট্রেস, প্রদাহ এবং খাদ্যাভ্যাসসহ বেশ কিছু বিষয় এই রোগটিকে ট্রিগার করার জন্য পরিচিত।

আসুন জেনে নিই কিছু খাবার সম্পর্কে, যা থাইরয়েড সমস্যা সমাধানে সহায়তা করবে-

প্রোবায়োটিকস

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সুরক্ষিত রাখতে অন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার সাথে সম্পর্কযুক্ত প্রায় ৭০-৮০ শতাংশ প্রতিরোধ কোষ অন্ত্রে অবস্থান করে। এ কারণেই থাইরয়েড সমস্যা সমাধানে প্রোবায়োটিকস গুরুত্বপূর্ণ। আপনি পরিপূরক হিসাবে এটি গ্রহণ করতে পারেন, আবার বিভিন্ন খাবারেও এই উপাদানটি বিদ্যমান যেমন- দই, ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিতে তৈরি আচার, কোম্বুচা, ভাত কাঁঞ্জি এবং বাটারমিল্ক প্রভৃতি।

হলুদ

হলুদে খুব শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি (প্রদাহনাশক) যৌগ রয়েছে যা কারকিউমিন নামে পরিচিত। হলুদ একটি দুর্দান্ত মশলা যা শরীরে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং প্রায় যেকোনো খাবারের সাথে মিশে যেতে পারে।

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড আরেকটি শক্তিশালী প্রদাহনাশক। পর্যাপ্ত পরিমাণে  ওমেগা-৩ নিশ্চিত করার জন্য, প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে মাছ, শিমের বীজ, ভার্জিন অলিভ ওয়েল, আখরোট প্রভৃতি রাখতে পারেন।

চিনিমুক্ত খাবার

প্রক্রিয়াজাত খাবারের সাথে উচ্চমাত্রার চিনি গ্রহণের ফলে দেহের প্রদাহের মাত্রা বেড়ে যায়। খাদ্যাভ্যাস থেকে চিনি কমিয়ে আনলে তা শক্তির স্তর নিয়ন্ত্রণ করতে এবং মানসিক চাপের মাত্রা হ্রাস করতে সহায়তা করে।

এছাড়াও দেহে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি পূরণ করা খুব জরুরি। রোদ থেকে স্বাভাবিকভাবে আমাদের দেহ ভিটামিন-ডি গ্রহণ করে থাকে। তবে সাপ্লিমেন্ট হিসেবেও এটি গ্রহণ করা যায়। আবার মেডিটেশন ও মাইন্ডফুলনেশ অনুশীলন, নিয়মিত শরীরচর্চা, সৃজনশীল কাজ প্রভৃতি আমাদেরকে স্ট্রেসের মাত্রা হ্রাস করতে সহায়তা করে। তথ্যসূত্র: দ্যা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

 

টাইমস/এনজে/এইচইউ

Share this news on:

সর্বশেষ