‘আল-বিদা’ লিখে রাতে ফেসবুকে পোস্ট, সকালে মিলল ঢাবি ছাত্রের ঝুলন্ত লাশ

বরিশালের উজিরপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার নাম ইমাম হোসেন। সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ) ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল। সোমবার সকালে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার গ্রামের বাড়ি গাজীরপাড় গ্রাম থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।

ইমাম হোসেন ওই এলাকার তোতা চৌকিদারের ছেলে। সে ঢাবির কবি জসীমউদদীন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিল। করোনাভাইরাস মহামারীতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের পর থেকে তিনি উজিরপুর থানার গাজীরপাড় গ্রামে নিজেদের বাড়িতেই ছিলেন।

আত্মহত্যার আগে রোববার রাত ২টা ১৭ মিনিটে ইমাম হোসেন তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ‘আল-বিদা’ লিখে একটি পোস্ট দেন। তবে তার আগে প্রায় এক মাস ধরেই তিনি তার ফেসবুকে আত্মহত্যা নিয়ে বেশ কয়েক বার পোস্ট দিয়েছেন।

ইমামের এলাকার বন্ধু ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ছাত্র মো. মনির হোসেন জানান, একটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল ইমামের। কিছুদিন আগে সম্পর্কটি ভেঙে যায়। এ নিয়ে ইমাম অনেক দিন ধরেই হতাশায় ভুগছিলেন।

তিনি আরও জানান, রবিবার রাতে নিজের বাড়িতেই এলাকার তিনজন বন্ধুর সঙ্গে অনেক রাত পর্যন্ত আড্ডা দেন ইমাম। সকাল সাড়ে আটটার দিকে ওই তিন বন্ধু বাসা থেকে চলে আসেন। বন্ধের মধ্যে এলাকায় থাকায় কিছুদিন ধরে স্থানীয় কয়েকজন স্কুলছাত্রকে পড়াচ্ছিলেন ইমাম। সকাল নয়টার সময় ওই ছাত্ররা ইমামের বাসায় পড়তে যান। ইমাম ছাত্রদের দুই দিনের ছুটি দেন। এর কিছু সময় পর দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে তার পরিবারের সদস্যরা ইমামকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেন।

বান্ধবীর বাবা-মা তাদের সম্পর্কটি মেনে নিতে পারছিল না বলে জানিয়েছেন ইমামের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র হোসাইন আজম।

এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, এটি একটি মর্মান্তিক ও বেদনাদায়ক ঘটনা। আমরা খুবই শোকাহত। আমাদের মেধাবী শিক্ষার্থীদের এখন বেঁচে থাকার সময়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে তাদের সমস্যা শেয়ার করা ও পরামর্শের অনেক জায়গা রয়েছে। এ ধরনের ঘটনা কখনোই কাম্য নয়।

তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উজিরপুর থানার ওসি জিয়াউল আহসান।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: