বাবা-মায়ের সঙ্গে নৌকা ভ্রমণে বেরিয়েছিল একমাত্র ছেলে তামিম। বিলের উপর দিয়ে টানানো বৈদ্যুতিক তারে শক খেয়ে হঠাৎ পানিতে পড়ে যায় তামিম। বাবা-মায়ের সামনেই পানিতে ভেসে যায় তামিম। নিখোঁজের ২০ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ডুবুরিরা তামিমের লাশ উদ্ধার করেন।
জানা গেছে, তামিম পাবনার সুজানগর উপজেলার আহম্মদপুর ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামের তাহেজ মন্ডলের একমাত্র ছেলে। মা নূরজাহান বেগম সোনাতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। তামিম এবার সুজানগর উপজেলার দুলাই উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে কলেজে ভর্তির অপেক্ষায় ছিল। পঞ্চম ও ৮ম শ্রেণিতে টেলেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছিল তামিম।
পাবনা ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যার হাউজ ইন্সপেক্টর সোহেল রানা এবং মৃত তামিমের খালা নতিজা খাতুন মৃতদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। মেধাবী ছাত্র তামিম এর মর্মান্তিক মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
আমিনপুর থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) খোকন চন্দ্র দাস স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, সুজানগর উপজেলার বিশাল বিল গাজনা বর্ষায় ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে পর্যটন কেন্দ্রের মত হয়ে ওঠে। প্রতিদিনই শত শত নারী পুরুষ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিল গাজনায় বেড়াতে আসে। বুধবার সকালে তামিমও বাবা-মা’র সঙ্গে বিল গাজনা বিলে পারিবারিক ভ্রমণে বের হয়েছিল। সারাদিন বেড়ানো শেষে তারা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয় এবং তাদের বহনকারী নৌকাটি যখন সুজানগর উপজেলার হাটখালি ইউনিয়নের গাজনা বিলের বাদাই নামক স্থানে পৌঁছায় তখন তামিম নৌকার সামনের গলুই এর কাছে দাঁড়িয়ে ছিল। এসময় বিলের মধ্য দিয়ে টানানো বৈদ্যুতিক তারের সংস্পর্শ লেগে তামিম নৌকা থেকে বিলের পানিতে পড়ে মুহূর্তের মধ্যে তলিয়ে যায়। ঘটনার পর পরই তামিমের বাবা-মায়ের চিৎকারে স্থানীয়রা নৌকা নিয়ে ছুটে আসেন। তারা বিকেলে থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত খোঁজাখুঁজি করে তামিমকে খুঁজে পাননি।
বৃহস্পতিবার রাজশাহী ফায়ার সার্ভিস থেকে ৩ জন ডুবুরি নিয়ে আসা হয়। তারা বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে অনুসন্ধান শুরু করেন। দুপুর সাড়ে ১২টায় বিলের পানি থেকে তামিমের লাশ উদ্ধার করেন।
আমিনপুর থানার ওসি মোজাম্মেল হক জানান, তামিমের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
টাইমস/জেকে/এইচইউ