কোভিড-১৯ ভাইরাস নিয়ন্ত্রণের সব থেকে কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা হলো ফেস মাস্ক। মাস্কের ব্যবহার ভাইরাসটি এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তিতে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস করে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকগণ দাবি করেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতারা যদি মাস্ক ব্যবহারের মতো প্রতিরোধমুলক ব্যবস্থা সমূহের বাস্তবায়ন না ঘটান তাহলে আগামী কয়েকমাসে করোনা আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে আরো ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ মারা যেতে পারে।
ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের ‘ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স এন্ড ইভালুয়েশন’ এর হিসাব অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে মাস্ক ব্যবহারের হার যদি ৫৩ শতাংশ থেকে ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায় তবে এর ফলে রক্ষা পাবে ৭০ হাজার মানুষের জীবন।
ইনস্টিটিউটের প্রধান ডাঃ ক্রিস মারে বলেন, “এটি মূলত আমাদের নেতারা যা করবেন তার উপর নির্ভর করবে।”
কোভিড-১৯ মহামারী শুরু হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত পৌনে দুই লাখেরও বেশি মানুষ এতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এই সংখ্যা বেড়ে আগামী ১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় ৩ লাখ ১০ হাজারে দাঁড়াতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন গবেষকগণ। তাদের করা দুই সপ্তাহ আগের পূর্বাভাসের থেকে এবারের পূর্বাভাসে মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার বেশি।
এ বিষয়ে মুরে বলেন, “কয়েকটি রাজ্যে, যেমন- ক্যালিফোর্নিয়াতে আক্রান্তের হার কমে আসছে, কিন্তু মৃত্যুর সংখ্যা এখনো কমেনি। মৃত্যুহার এখনো অনেকটাই আগের অবস্থান ধরে রেখেছে।”
তিনি আরো বলেন, “এখনো ইন্ডিয়ানা, কেন্টাকি এবং মিনেসোটা স্টেটে সংক্রমণের হার বেশি। মনে রাখতে হবে আমরা কোভিড-১৯ নিয়ে পূর্বে যা আশঙ্কা করেছিলাম তার থেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতি ইতিমধ্যে হয়ে গেছে।”
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলে করোনা সংক্রমণ কয়েক সপ্তাহ ধরে হ্রাস পেয়েছে। তবে মৃত্যু হার এখনো তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। দেশটিতে গত ২৪ দিন ধরে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে গড়ে প্রতিদিন ১০০০ জনেরও বেশি লোক মৃত্যুবরণ করছেন।
ইউএস সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন এর ডিরেক্টর ড. রবার্ট রেডফিল্ড এই সপ্তাহের শুরুর দিকে বলেছেন, পরের সপ্তাহ থেকে মৃত্যু হার কমতে শুরু করবে। তিনি আরো বলেন, “আমরা এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-১৯ এর থার্ড ওয়েভ চাই না। আমাদেরকে এটি ঠেকাতে হবে।”
মহামারীর তৃতীয় দফার ধাক্কা প্রতিরোধের বিষয়ে মুরে বলেন, গভর্নরদের উচিত নাগরিকদের মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করা। এর জন্য অবশ্যই সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন এবং এর ফলাফল অত্যন্ত ইতিবাচক হবে।
উল্লেখ্য, মহামারীর শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রে মাস্ক ব্যবহারের বিষয়টি অবহেলা করা হয়। স্বয়ং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তখন বলেছিলেন, চিকিৎসাক্ষেত্রে জড়িত নয় এমন ব্যক্তিদের মাস্ক ব্যবহারের প্রয়োজন নেই।
তথ্যসূত্র: সিএনএন
টাইমস/এনজে