করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এবার আশুরার দিন শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিল হয়েছে হোসেনী দালান চত্বরের ভেতরই। চার দেয়ালের ভেতরে ঐতিহ্যবাহী এ মিছিল অবরুদ্ধ থাকায় বিপুল সংখ্যক মানুষ এতে অংশ নিতে পারেননি।
জানা গেছে, আশুরার তাজিয়া মিছিল সড়কে বের না করার জন্য আগে থেকেই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল পুলিশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাদের চত্বরেই মিছিল বের করার সিদ্ধান্ত নেয় হোসেনী দালান ইমামবাড়া কর্তৃপক্ষ। অন্যান্য সময় তাজিয়া মিছিল হোসেনী দালান থেকে বের হয়ে বকশিবাজার, উর্দ্দুরোড, লালবাগ চৌরাস্তা, ঘোড়া শহীদের মাজার, আজিমপুর, নিউমার্কেট হয়ে ঝিগাতলা (ধানমন্ডি লেকের কাছে) গিয়ে শেষ হয়।
মিছিলে অংশ নিতে রোববার সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তরা আসতে থাকেন হোসেনী দালান প্রাঙ্গণে। চলতে থাকে মিছিলের প্রস্তুতি। সকাল থেকেই হোসেনী দালান চত্বরে প্রবেশের জন্য মানুষের দীর্ঘ লাইন শুরু হয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা একজন একজনকে পরীক্ষা করে আর্চওয়ের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করিয়েছেন। হোসেনী দালান চত্বরের ভেতরেও অবস্থান নেয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
সীমিত আকারে রবিবার সকাল ১০টা থেকে দালান চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় তাজিয়া মিছিল। মূল সড়কে বের হয়নি মিছিল। বেলা ১১টার দিকে ইমামবাড়ার উত্তর পাশে গিয়ে শেষ হয় মিছিল।
মিছিলে অংশ নেয় বিপুল সংখ্যক নারী। এসেছিল শিশুরাও। তরুণরা ছিল কালো কাবুলি-পাঞ্জাবি ও পায়জামা পরা, তরুণীদের গায়ে ছিল কালো সালোয়ার কামিজ।
মিছিলে ছিল কালো কাপড়ের ইমাম হোসেন (র.) এর তাজিয়া (প্রতীকী কবর)। মিছিলের শেষের দিকে সুদৃশ্য বড় আরেকটি তাজিয়া। নারী-পুরুষ শিশুদের হাতে অসংখ্য কালো, লাল ও সবুজ নিশান। তরুণদের (ভেস্তা) হাতে হাতে বিচিত্র আলাম (দীর্ঘ লাঠির মাথায় পতাকা)।
হোসেনী দালান ইমামবাড়ার তত্ত্বাবধায়ক এম এম ফিরোজ হোসেন বলেন, আমরা এবার করোনায় জর্জরিত। আমাদের যে তাজিয়া মিছিলের ৪০০ বছরের ঐতিহ্য সেখানে কিছুটা বাধাপ্রাপ্ত হয়েছি করোনার কারণে। এবার আমরা আশুরার মিছিল ভেতরেই করছি।
তিনি বলেন, আমরা আশা করি আগামীতে সেই পুরনো ঐতিহ্যে ফিরে যাব ইনশাআল্লাহ। তাজিয়া মিছিলে যা থাকে এবারও তার সবকিছুই আছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আমরা সবকিছু করার চেষ্টা করছি।
টাইমস/এইচইউ