বাবা জুলহাসের সাথে সন্ধ্যায় প্রতিদিন নামাজে যেতেন তার সাত বছরের শিশুসন্তান জুবায়ের। জুলহাস ও তার স্ত্রী রহিমা খাতুন দুজনই গার্মেন্টে কাজ করে। এজন্য কাজ থেকে ফেরার পর বাবার সাথে রোজই নামাজ পড়তে যেত জুবায়ের। শুক্রবার মসজিদে যেতে চায়নি জুবায়ের। নামাজ পড়ার অভ্যাস ছোট থেকেই যেন গড়ে ওঠে সেজন্য মা রহিমা খাতুন জোর করে তাকে পাঠিয়েছিলেন। গ্যাসের লিকেজ থেকে বিস্ফোরিত হয়ে জুবায়ের চলে গেছে না-ফেরার দেশে। সাথে বাবা জুলহাস হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন দগ্ধ হয়ে।
নারায়ণগঞ্জের পশ্চিম তল্লায় এশার নামাজ চলাকালে বাইতুস সালাম মসজিদে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে সাত বছরের শিশু জুবায়েরসহ ৩৭ জনকে ভর্তি করা হয় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১২টার দিকে মারা যায় জুবায়ের। এ দুর্ঘটনায় তার শরীরের ৯৫ ভাগই ঝলসে যায়।
জুবায়েরের চাচা নাহিদ হাসান শাকিল জানান, শহরটির পশ্চিম তল্লা মসজিদের পাশেই একটি বাসায় ভাড়া থাকেন তারা। জুলহাস মিয়া পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন। সন্ধ্যায় গার্মেন্ট থেকে বাসায় ফিরে মাগরিব ও এশার নামাজ জামায়াতের সঙ্গে পড়েন। সঙ্গে নিয়ে যেতেন একমাত্র সন্তান জুবায়েরকে।
জুবায়েরের মা রাহিমা খাতুন বলেন, গ্রাম থেকে আমার শাশুড়ি ফোন করে জানায় জুবায়ের স্কুলে যেতে চায়, পড়তে চায়। এরপর জুবায়েরের বাবাকে বললাম ছেলেতো বড় হয়েছে। স্কুলে পড়ার বয়স হইছে। জুবায়েররে লইয়া আও। কোরবানীর ঈদের পর জুবায়েরকে নিয়ে আসি আমাদের কাছে। এরপর বাড়ির কাছে সবুজবাগ মডেল কিন্ডারগার্টেন স্কুলে ভর্তিও করেছি। স্কুল থেকে মাস্টাররা বললো করোনা গেলে স্কুলে দিয়ে যাবেন। এখনতো জুবায়ের আর কোনদিন স্কুলেও যাবে না।
টাইমস/জেকে