বিজ্ঞানে কে বা কারা নোবেল পুরস্কার পাবেন তা অনুমান করা সব সময় কঠিন কেন?

কে নোবেল পুরস্কার পাবেন তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আগ্রহের অন্ত নেই। বিভিন্ন পত্রপত্রিকাতেও চলে নানা ধরণের অনুমান-অনুসন্ধান। কিন্তু কাদেরকে এ জন্য মনোনীত করা হয়েছে, কারা সংক্ষিপ্ত তালিকায় রয়েছেন, কিংবা এ সংক্রান্ত অন্য সব নথিপত্র অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে জনসাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখা থাকে। তবে তাই বলে মানুষ যে অনুমান করার চেষ্টা করে না তা কিন্তু নয়।

পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন এবং মেডিসিন বিভাগে সাধারণত যুগান্তকারী আবিষ্কারকে সম্মান জানিয়ে বৈজ্ঞানিক অর্জনের অগ্রদূতদের পুরস্কারটি দেয়া হয়ে থাকে। তবে শেষ পর্যন্ত কাকে স্টকহোমে ডেকে পাঠানো হবে সে বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী ভুল হওয়া খুব স্বাভাবিক একটি ধারণা।

চিকিৎসা বিজ্ঞানে কে নোবেল পাচ্ছেন তা অনুমান করতে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার যেমন লস্কর অ্যাওয়ার্ড কোন বিজ্ঞানী পাচ্ছেন প্রভৃতি অনেকে বিবেচনা করে থাকেন। অনেকে বোঝার চেষ্টা করেন বিজ্ঞানের কোন কোন শাখাকে নোবেল কমিটি এবার গুরুত্ব দিতে পারে এবং হিসেব করেন একটি বিশেষ ক্ষেত্রকে সম্মানিত করার আগে সাধারণত গড়ে কত বছর বিরতি দেয়া হয়।

মজার ব্যাপার হলো ১৯৯৫ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ১১৪টি ভিন্ন বৈজ্ঞানিক শাখার মধ্যে মাত্র পাঁচটি শাখাতে অর্ধেকের বেশি নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। সেই ৫টি শাখা হলো- পার্টিক্যাল ফিজিক্স, অ্যাটোমিক ফিজিক্স, সেল বায়োলোজি, নিউরো সাইন্স এবং মলিকিউলার ক্যামেস্ট্রি।

১৯৮৫ সালে সুইডিশ শিল্পপতি আলফ্রেড নোবেলের করা নিয়ম অনুসারে নোবেল নির্বাচন কমিটি কেবলমাত্র তিনজনকে পুরস্কৃত করতে পারবে, কিন্তু বেশির ভাগ বৈজ্ঞানিক গবেষণা যেহেতু দলবদ্ধভাবে করা হয় তাই বিজয়ী নির্বাচন করা কমিটির জন্যেও বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

শান্তি পুরষ্কারের বিপরীতে, বিজ্ঞানে দেয়া নোবেল পুরস্কারগুলো এমন কৃতিত্বের মূল্যায়ন করে যা সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। যেমন ১৯৮০ এর দশক থেকে লিথিয়াম ব্যাটারির বিকাশের ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি জানিয়ে গত বছর জন বি গুডঅ্যানাফকে রসায়নের পুরস্কারটি দেয়া হয়। তিনি এ পুরস্কারপ্রাপ্ত সব থেকে বয়স্ক ব্যক্তিত্ব।

এ থেকে ধারণা করা যায় কোভিড-১৯ এর ওষুধের জন্য গবেষণারত কোন বিজ্ঞানীর এবার নোবেল পাওয়ার খুব একটা সম্ভাবনা নেই। তবে অনেকেই মনে করেন বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া এই মহামারীটি ঠেকাতে যারা গবেষণা করছেন তারাই এই পুরস্কারের দৌড়ে সব থেকে এগিয়ে রয়েছেন।

তবে মজার বিষয় হলো ক্ল্যারিভেট অ্যানালিটিকস ২০০২ সাল থেকে সম্ভাব্য নোবেল বিজয়ীদের বিষয়ে ৫৪টি সঠিক অনুমান করেছে। তাদের মতে, কারও করা গবেষণা পত্রটি কীভাবে এবং কতবার অন্যান্য গবেষণায় উদ্ধৃত হয়েছে সেটি নোবেল পুরস্কার জেতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

তবে নোবেল বিজয়ী মনোনয়নের ক্ষেত্রে আসলে ঠিক কোন বিষয়গুলো বিবেচনা করা হয় এবং কোন কোন বৈশিষ্ট্য মূল্যায়ন করা হয় তা সত্যিই একটি রহস্য।  

তথ্যসূত্র: সিএনএন

 

টাইমস/এনজে

Share this news on: