ঝিনাইদহে পরিচয়হীন মানসিক প্রতিবন্ধী নারী ও তার কন্যা সন্তানের দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী প্রশাসন। এছাড়া আশ্রয়দাতা দিনমজুর আমজাদ-ছাকিরণ দম্পতিকে স্বাবলম্বী করতে নগদ ৫৫ হাজার টাকা ও একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যান রিকসা কিনে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার বেলা ১১ টার দিকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া সাহায্য তুলে দেন জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ জানান, কালীগঞ্জ উপজেলার কোলাবাজারে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতেন পরিচয়হীন মানসিক প্রতিবন্ধী এ নারী। নরপশুদের যৌনলালসার শিকার হয়ে কখন সন্তান পেটে এসে তাও বোঝার ক্ষমতা নেই তার। ওই এলাকার আমজাদ-ছাকিরণ দম্পতি তাকে নিজ বাড়িতে আশ্রয় দেন। দিনমজুর হলেও পরম স্নেহে সেবা যত্নসহ চিকিৎসা করান তারা। হতদরিদ্র এ দম্পত্তির মহত্বের খবর উঠে আসে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী নজর কাড়ে। এরপর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে প্রতিবন্ধী অন্ত:স্বত্তা ওই অসহায় নারীকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। ১৫ দিন আগে একটি কন্যা সন্তানের মা হয় সে।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, ওই প্রতিবন্ধী নারী ও তার কন্যা সন্তান আদুরির সব দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রাথমিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এক লাখ টাকায় ব্যাটারিচালিত নতুন একটি নতুন ভ্যান রিকসা এবং নগদ ৫৫ হাজার টাকা আমজাদ-ছাকিরন দম্পতিকে প্রদান করা হয়। সেই সাথে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তাদের জন্য মাসিক ভাতার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশ মত শিশুটি লালন পালন করতে সরকারের পক্ষ থেকে সব কিছু করা হবে বলেও জানান ডিসি।
এ সময় কালীগঞ্জবাসির হয়ে প্রধান মন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ঝিনাইদহ- ৪ আসনের সংসদ সদস্য অনোয়ারুল আজীম আনার। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুর্বণা রানী সাহা, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শামীম শিরিন লুবনা, কালীগঞ্জ থানার ওসি মাহফুজুর রহমান প্রমুখ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শামীম শিরিন লুবনা জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসার শেষে অজ্ঞাত নামা ওই মানসিক প্রতিবন্ধী নারীকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, নরমাল ডেলিভারী করানো হয় তাকে। এতে করে শারীরিক কোন সমস্যা নেই তার। তবে সে মানুষ দেখলেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। কিন্তু আমজাদ-ছাকিরণকে দেখে শান্ত থাকে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া অর্থ ও ভ্যান সাহায্য পেয়ে খুশি আমজাদ ও ছাকিরণ।
জানা গেছে, প্রথম ওই নারীকে দেখেন কোলাবাজার এলাকার কুল বরই ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ। তার কাছ থেকে জানতে পারেন একই উপজেলার পারিয়াট গ্রামের অপর দিনমুজুর নিঃসন্তান জাহিদ। তিনি অসহায় ওই নারীকে উদ্ধার করেন এবং আমজাদ ও ছাকিরণ দম্পতির বাড়িতে রাখেন। এরপর ঘটনাটি গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
টাইমস/ফাতেমা/এইচইউ