প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়ক নির্মাণের ফলে হাওরবাসীর চলাচলের দুর্ভোগ কমেছে, সৃষ্টি হয়েছে নতুন কর্মসংস্থানের। ফলে হাওরাঞ্চলের মানুষের দুঃখ আর থাকবে না।
বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়কের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। মহামান্য রাষ্ট্রপতি যদি এই উদ্যোগটা না নিতেন, আর বারবার আমাদের না বলতেন, তা হলে তো এই অঞ্চলে যে এই রকমভাবে রাস্তা করা যায়, এটি হয়তো চিন্তারই বাইরে ছিল। কিন্তু আজকে তার অনুপ্রেরণা এবং তারই উদ্যোগে এ রাস্তাটি আমরা করতে পেরেছি।
এই সড়ক হওয়ায় কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলের মানুষের এখন আর সেই ‘আগের মতো দুঃখ থাকবে না’ বলে আশা প্রকাশ করেন সরকারপ্রধান।
সড়কটির উদ্বোধন ঘোষণার পর ভিডিওতে হাওরের বিস্ময় ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম অলওয়েদার সড়কের ভিডিও চিত্র দেখানো হয়।
এসময় হাওর ও সড়কটির সৌন্দর্য দেখে অভিভূত হয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, আমার মনটা পড়ে থাকলো। এ সড়ক দিয়ে গাড়িতে কবে যাবো। রাষ্ট্রপতিও চান আমি যেন সরাসরি যাই। আমি যাবো। করোনা পরিস্থিতি উন্নতি হলে এ সড়ক দেখতে যাবো।
সারা দেশে যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পণ্য পরিবহন ও মানুষের অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা নিশ্চিত করতে তার সরকার সারা দেশে ‘যোগাযোগ নেটওয়ার্ক’ গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, সারা দেশে একটা সড়কের নেটওয়ার্ক গড়ে তুলছি; যাতে করে যোগাযোগব্যবস্থাটা… নৌপথগুলো সচল করা… সেই ব্যবস্থা নিয়েছি। রেলপথ সংযোগ পুনরায় স্থাপন করে এবং আরও নতুন নতুন অঞ্চলে রেললাইন সম্প্রসারণ করে রেলে যোগাযোগের সুযোগটা বাড়াচ্ছি। নৌপথে যোগাযোগ বাড়াচ্ছি, সড়কপথে যোগাযোগ বাড়াচ্ছি।
তিনি বলেন, যখন যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হবে, মানুষের পণ্য পরিবহনের সুবিধা হবে। সেখানে মানুষের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বিতা ফিরে আসবে এবং বাংলাদেশ হবে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ।
হাওরের বিশাল জলরাশির মাঝখানে ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়ক এখন একটি আকর্ষণীয় পর্যটনস্থলে পরিণত হয়েছে। কিশোরগঞ্জ জেলায় হাওরের বুকে ইটনা থেকে মিঠামইন হয়ে অষ্টগ্রাম পর্যন্ত ২৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়ক নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৮৭৪.০৮ কোটি টাকা। ২০১৬ সালের ২১ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এ সড়কের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছিলেন।
অনুষ্ঠানের গণভবন প্রান্তে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম উপস্থিত ছিলেন।
আর কিশোরগঞ্জের মিঠামইন প্রান্তে ছিলেন কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, ডিসি মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী।
টাইমস/এইচইউ