কোভিড-১৯ এর কারণে নাটকীয় হারে কমেছে কার্বন-ডাইঅক্সাইড নিঃসরণ

বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে বহু প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেছে, সহসাই সার্স-কোভ-২ ভাইরাসটির সংক্রমণ রোধ করা যাবে এমন কোনো সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না। তবে গবেষকরা বলছেন পরিবেশের উপর এর কিছু ইতিবাচক প্রভাবও রয়েছে। ২০২০ সালের প্রথমার্ধে বিশ্বজুড়ে কার্বন-ডাইঅক্সাইড নিঃসরণের পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে নাটকীয়ভাবে। এমনকি ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দা, ১৯৭৯ সালের তেল সংকট কিংবা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের থেকেও এই হার অনেক বেশি। গবেষণাপত্রটি ‘ন্যাচার কম্যুনিকেশন’ জার্নালে প্রকাশিত হয়।

আন্তর্জাতিক গবেষণা দলটি দেখতে পেয়েছে, এ বছরের প্রথম ৬ মাসে ২০১৯ সালের একই সময়ের তুলনায় ৮.৮ শতাংশ কম কার্বন-ডাইঅক্সাইড নিঃসরণ হয়। সব মিলিয়ে প্রায় ১.৫৫১ বিলিয়ন (১৫৫ কোটি) টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ কমেছে। গবেষকরা বলছেন এই গবেষণা শুধু ক্ষতিকর গ্যাসটির নিঃসরণ হ্রাসের পরিমাণ নির্ণয় করেছে তা নয়, এই গবেষণা মহামারী পরবর্তী সময় জলবায়ুর স্থিতিশীলতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণেও সহায়তা করতে পারে।

বেইজিংয়ের সিংগুয়া ইউনিভার্সিটির ডিপার্টমেন্ট অব আর্থ সিস্টেম সাইন্সের গবেষক ঝু লিউ বলেন, “এপ্রিলের শুরুতে যখন কোভিড-১৯ এর প্রকোপ মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল তখন বিভিন্ন দেশে লক ডাউন শুরু হয়। সে সময় কার্বন নিঃসরণের মাত্রা এমনকি ১৬ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে। এমনটা খুব একটা দেখা যায় না। তবে বিভিন্ন সরকারি ছুটি যেমন বড়দিন কিংবা চাইনিজ স্প্রিং ফ্যাস্টিভ্যালের সময়ও কার্বন নিঃসরণ হ্রাস পায়।”

এর ফলে জানা যাচ্ছে অর্থনীতির কোন ক্ষেত্রটি সর্বাপেক্ষা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রফেসর ড্যানিয়েল ক্যামেন এর মতে, “সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পরিবহন খাত। লক ডাউন এবং ঘরে থেকে কাজ করার ফলে পরিবহন খাত থেকে নির্গত কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ ৪০% পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে। অন্যদিকে শক্তি এবং শিল্প খাতে ২২% ও ১৭% হ্রাস ঘটেছে।”

এ গবেষণায় ৩১টি দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন, বিশ্বজুড়ে ৪০০টি শহরের যান চলাচল, ৬২টি দেশের জ্বালানী তেলের ব্যবহার এবং ২০০টি দেশের গৃহস্থালীর তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র: সাইন্স ডেইলি

 

টাইমস/এনজে

Share this news on: