করোনা প্রতিরোধে সফল হতে পারে যক্ষ্মার টিকা

যক্ষ্মা বা টিবি রোগের জীবাণু প্রতিরোধের লক্ষ্যে প্রায় ১০০ বছর আগে বিজ্ঞানীরা বিসিজি টিকা তৈরি করেছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে এই বিসিজি টিকা কোভিড-১৯ প্রতিরোধেও সক্ষম।

যুক্তরাষ্ট্রের সেডাস সিনাই মেডিক্যাল সেন্টারে পরিচালিত এক গবেষণার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিসিজি টিকা হয়তো কোভিড-১৯ প্রতিরোধেও সক্ষম। গবেষণার ফলাফল ‘দ্যা জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল ইনভেস্টিগেশন’ এ প্রকাশিত হয়েছে।

এ বিষয়ে গবেষণাপত্রের একজন লেখক মোশে আর্ডিটি বলেন, ‘আমরা বিসিজি টিকা নিয়ে গবেষণা করতে আগ্রহী ছিলাম। কারণ, বলা হয়ে থাকে এটি যক্ষ্মা ছাড়া আরও অনেক ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস বাহিত রোগ প্রতিরোধে সক্ষম।’

গবেষণার উদ্দেশ্যে এ বছরের ১১ মে থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত ৬ হাজার ২০১ জন স্বাস্থ্যকর্মীর রক্তের নমুনা, চিকিৎসার ইতিহাস ও তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর সংগ্রহ করা হয়। এদের মধ্যে ১ হাজার ৮৩৬ জন বিসিজি টিকা গ্রহণ করেছেন। চার হাজার ২৭৫ জন এটি গ্রহণ করেননি এবং বাকী ৭৫ জন এ বিষয়ে নিশ্চিত নন।

গত ৬ মাসের তথ্য থেকে দেখা গেছে, বিসিজি টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে কোভিড-১৯ রোগের উপসর্গ তুলনামূলক কম। এছাড়া তারা এই রোগটিতে কম আক্রান্ত হয়েছেন।

অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে গড়ে ৩.৫% এর দেহে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে বিসিজি টিকা গ্রহণকারী ২.৭ শতাংশের দেহে রোগটি শনাক্ত হয়েছে। অন্যদিকে টিকা গ্রহণ করেননি এমন লোকেদের ৩.৮ শতাংশের দেহে রোগটি শনাক্ত হয়েছে।

বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, বিসিজি টিকা ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া প্রাথমিক পর্যায়ে প্রতিরোধ করতে আমাদের সহজাত রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তোলে। তবে কোভিড-১৯ এর জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি টিকার সমমানের কার্যকারিতা বিসিজি টিকা থেকে হয়তো পাওয়া যাবে না।

অর্ডিটি মনে করেন, যদি এর কার্যকারিতা প্রমাণিত হয় এবং কোভিড-১৯ প্রতিরোধে ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয় তবে খুব দ্রুত এটি সাধারণ লোকের কাছে পৌঁছানো যাবে। যেহেতু বিসিজি টিকা ইতিমধ্যে মানব দেহে ব্যবহার করা হচ্ছে, তাই এটি ব্যবহারের ঝুঁকিও কম।

এর আগে গত আগস্টে অন্য একটি গবেষণায় বলা হয়, যে সব দেশে বাধ্যতামূলক ভাবে বিসিজি টিকা প্রদান করা হয়েছে সে সব দেশে কোভিড-১৯ এর প্রভাব তুলনামূলক ভাবে সীমিত।

তথ্যসূত্র: মেডিক্যাল নিউজ টুডে

 

টাইমস/এনজে/এসএন

Share this news on: