গর্ভবতি মায়ের মানসিক চাপ সন্তানের জন্য হুমকি

গর্ভবতী মহিলাদের মানসিক চাপ ও উদ্বেগের প্রভাব গর্ভে থাকা সন্তানের মস্তিষ্কের ওপর পড়ে। যা নবজাতকের মস্তিষ্ক গঠনের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। সম্প্রতি ‘জামা ওপেন নেটওয়ার্ক’ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে এমন তথ্যই দেয়া হয়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, অতিমাত্রায় উদ্বেগে থাকা গর্ভবতী মায়েদের ভ্রূণের কার্যনির্বাহী ও উচ্চতর জ্ঞানীয় কার্যক্রমে জড়িত এবং মানসিক ও আচরণগত নিয়ন্ত্রণের সাথে সম্পর্কিত অঞ্চল দু’টির সাথে  যোগাযোগ দুর্বল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

গবেষণাপত্রের লেখক ক্যাথরিন লিম্পেরোপ্লোস এ বিষয়ে বলেন, ‘জরায়ুতে ভ্রূণের মস্তিষ্ক যেভাবে সংগঠিত হচ্ছে তাকে গর্ভধারিণীর ক্ষতিকর মাত্রার উদ্বেগ সরাসরি প্রভাবিত করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। মনে রাখতে হবে গর্ভবতী মা যা অনুভব করছেন, অনাগত শিশুটিও তা অনুভব করছে।’

এই ক্ষতিকর মাত্রার উদ্বেগ বা মানসিক চাপ হিসেবে এমন মাত্রা নির্দিষ্ট করা হচ্ছে যা ব্যক্তির দৈনন্দিন কার্যক্রম ব্যাহত করতে যথেষ্ট কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে চিকিৎসা গ্রহণের মতো মারাত্মক নয়।

মানসিক চাপের ফলে আমাদের দেহে কোর্টিজল নামক একধরণের হরমোন নিঃসরিত হয়, এটি ফাইট অর ফ্লাইট হরমোন নামেও পরিচিত। কোর্টিজল হরমোন আমাদের আসন্ন বিপদ থেকে বাঁচতে সহায়তা করে, তবে দেহে প্রদাহ সৃষ্টির জন্যেও এটি দায়ী। বর্তমান জটিল সমাজ ব্যবস্থায় অতিরিক্ত কোর্টিজল নিঃসরণের দরুন আমাদের অনেকেই দীর্ঘ মেয়াদী প্রদাহ জনিত সমস্যায় ভুগছেন। দেহের অতিরিক্ত মাত্রার এই কোর্টিজল গর্ভের সন্তানকেও নেতিবাচক ভাবে প্রভাবিত করে।

বিশেষত এই মহামারির সময় সাধারণ মানুষের মাঝে উদ্বেগ ও মানসিক চাপের মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে অনেক বেড়ে গেছে। ফলে মহামারির সময় যেসব মায়েরা গর্ভবতী রয়েছেন তাদেরকে বিশেষ ভাবে সতর্ক থাকতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তবে আশার কথা হলো শরীরচর্চা, মেডিটেশন ও মাইন্ডফুলনেস প্রভৃতি অনুশীলনের মধ্যদিয়ে অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও কোর্টিজলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।

তথ্যসূত্র: মেডিকেল নিউজ টুডে

 

টাইমস/এনজে/এসএন

Share this news on: