স্মার্টফোনেই হতে পারে কোভিড-১৯ টেস্ট

বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত উর্ধমুখী। কোভিড-১৯ পরীক্ষায় বর্তমানে স্বীকৃত দু’টি পদ্ধতি হচ্ছে পিসিআর বা ল্যাব নির্ভর পরীক্ষা এবং র‌্যাপিড টেস্ট। বলা হয়ে থাকে, র‌্যাপিড টেস্টের থেকে ল্যাব টেস্ট বেশি নিখুঁত। যদিও পিসিআর পরীক্ষা অনেক বেশি ব্যয় আর সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।

তবে নতুন কোভিড-১৯ শনাক্তের জন্য একটি নতুন প্রযুক্তি আসতে চলেছে। যেখানে স্মার্টফোনের সাহায্যে কার্যকর ভাবে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসটি শনাক্ত করা হবে। নতুন এই পরীক্ষা পদ্ধতিকে বলা হচ্ছে, সিআরআইএসপিআর।

এই প্রযুক্তির সাহায্যে ভাইরাসের আরএনএ এম্প্লিফাই (বৃদ্ধি) না করেই স্মার্টফোনের ক্যামেরার মাধ্যমে তা শনাক্ত করা সম্ভব হবে। এটি শুধু ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করবে না, একইসাথে ভাইরাসকণার পরিমাণ পরিমাপ করবে। এর মধ্যদিয়ে ভাইরাসটি কতটুকু বিকশিত হয়েছে তা বোঝা যাবে।

সিআরআইএসপিআর প্রযুক্তির সাহায্যে মূলত বিজ্ঞানীরা জিন সম্পাদনা করে থাকেন। এ বছর প্রযুক্তিটির দুই উদ্ভাবক এমানুয়েল কারপেন্টার ও জেনিফার এ. ডোডনা ক্যামেস্ট্রিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।

বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারি ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে বিজ্ঞানীরা সিআরআইএসপিআর প্রযুক্তিটির সাহায্যে কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ পদ্ধতি আবিষ্কারের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তাদের আবিষ্কৃত যন্ত্রটি জুতার বাক্সের মতো বড় এবং এর মাধ্যমে সিআরআইএসপিআর-সিএএস৩এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে।

ডিভাইসটিতে নমুনা প্রজ্বলিত করতে একটি লেজার এবং কোনও ফ্লুরোসেন্ট আলো জ্বলে উঠলে তা শনাক্ত করতে একটি লেন্স ব্যবহার করা হয়েছে। ফ্লুরোসেন্ট আলো জ্বলে উঠলে লেন্সের উপর স্থাপিত স্মার্টফোনের ক্যামেরার সাহায্যে সংরক্ষণ করা হবে।

ডিভাইসটিতে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের বিভিন্ন রকম নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে এর সাহায্যে প্রতি মাইক্রোলিটার রক্তে মাত্র ১০০টি ভাইরাসকণার উপস্থিতিও ৩০ মিনিটের কম সময়ে শনাক্ত করা সম্ভব।

এ বিষয়ে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার একজন বায়োইঞ্জিনিয়ার ড্যানিয়েল ফ্লেচার বলেন, ‘আমাদের গবেষণা বলছে, ভাইরাসটি আমরা খুব সহজে এবং কম সময়েই শনাক্ত করতে পারবো। এর জন্য দামি এবং অত্যাধুনিক ল্যাবের প্রয়োজন নেই।’

নতুন এই গবেষণার ফলে কোভিড-১৯ পরীক্ষায় নতুন গতি আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কার্যকর ভাবে এই পদ্ধতির প্রয়োগ করা গেলে কম খরচে এবং কম সময়ে অধিক সংখ্যক পরীক্ষা সম্পাদন করা সম্ভব হবে। ডিভাইসটি বহনযোগ্য এবং তুলনামূলক ভাবে সস্তা হওয়ায় প্রান্তিক পর্যায়েও এটি পৌঁছে দেয়ার সুযোগ রয়েছে।

তথ্যসূত্র: মেডিকেল নিউজ টুডে

 

টাইমস/এনজে/এসএন

Share this news on: