ছাত্রীকে ধর্ষণের সময় কান্না করায় উচ্চশব্দে গান বাজায় বয়ফ্রেন্ড!

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন এমন কথা বলে ছাত্রীকে বাসায় ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন বয়ফ্রেন্ড রাকিবুল হাসান আরিয়ান। এটা যে স্রেফ অভিনয় ছিল তা বুঝতে পারেননি কলেজছাত্রী। বাসায় গিয়ে দেখেন তার বয়ফ্রেন্ড বন্ধুর সঙ্গে আড্ডা মারছেন। বাসায় আর কেউ নেই। আয়োজন দেখে বুঝতে পারলেন বয়ফ্রেন্ডের উদ্দেশ্য ভালো নয়। কলেজছাত্রী বিষয়টি যখন বুঝতে পারলেন ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। প্রতারক বয়ফ্রেন্ডের অভিনয়ের ফাঁদে পড়েছেন তিনি। এসময় সম্ভ্রম রক্ষায় বয়ফ্রেন্ডের পায়ে ধরে কান্নাকাটি শুরু করেন ওই ছাত্রী। কান্নার আওয়াজ যাতে না শোনা যায় সেজন্য উচ্চস্বরে গান বাজানো শুরু করেন বয়ফ্রেন্ড। একপর্যায়ে বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। পরে আরও কয়েকবার ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। ঘটনাটি চট্টগ্রাম নগরীর আকবর শাহ এলাকার।

চাঞ্চল্যকর ধর্ষণের ওই ঘটনায় পুলিশ আরিফ চৌধুরী বাড়ির ভাড়াটিয়া মমতাজ চৌধুরীর ছেলে বয়ফ্রেন্ড আরিয়ানকে গ্রেপ্তার করেছে। ওই ঘটনায় মেহেদী হাসান আশিক রাব্বানী বাবু (২৩) নামে আরও এক আসামি পলাতক আছে। মেহেদী আকবর শাহ থানার পূর্ব ফিরোজ শাহ কলোনির ঈদগাঁও মাঠের পূর্বপাশে ই/পি লেনের আব্দুল বাতেন মেম্বারের ভবনের পঞ্চম তলার বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম জাহেদের ছেলে।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের পশ্চিম জোনের পরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান বলেন, ধর্ষণের ঘটনার পর রাকিবুল নগরীর মাস্টার লেইনে এক আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপন করে ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সবকিছু স্বীকার করেছে।

রাকিবুল চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরওয়ার জাহানের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহির হোসেন।

মামলার এজাহারে বাদির অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, ঘটনার শিকার ১৮ বছর বয়সী মেয়েটির বাসা আকবর শাহ থানা এলাকায়। তিনি নগরীর ওমরগণি এমইএস কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। রাকিবুলের সঙ্গে মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তবে পরিবারের চাপে মাসখানেক আগে মেয়েটি সেই সম্পর্ক ভেঙে দেয়। গত শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে বই কেনার কথা বলে মেয়েটি বাসা থেকে বের হয়। রাতে চরম অসুস্থ ও বিধ্বস্ত অবস্থায় বাসায় ফিরে কাঁদতে শুরু করে।

মেয়েটি অভিভাবকদের জানায়, মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হওয়ার কথা বলে তাকে ফোন করেছিল রাকিবুল। আহত অবস্থায় সে মেহেদীর বাসায় আছে জানিয়ে তাকে সেখানে যাবার অনুরোধ করে। দুর্ঘটনার কথা শুনে মেয়েটি ওই বাসায় ছুটে যায়। কিন্তু সেখানে গিয়ে সে দেখতে পায়, রাকিবুলের দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার বিষয়টি মিথ্যা। ফাঁকা বাসায় রাকিবুল ও মেহেদী মিলে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বাসায় ঢোকার পর তাদের উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে মেয়েটি দু’জনের পায়ে ধরে কান্না শুরু করে। কিন্তু কান্নার চিৎকার যাতে কেউ শুনতে না পায় সেজন্য তারা উচ্চশব্দের সাউন্ডবক্সে গান ছেড়ে দেয়। পরে তাকে দুই বন্ধু মিলে ধর্ষণ করে।

 

টাইমস/জেকে/এসএন

Share this news on: