স্বামীর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছেন চিত্রনায়িকা তমা মির্জা!

চিত্রনায়িকা তমা মির্জার বিরুদ্ধে স্বামীর মাথা ফাটিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয় তার হাতও ভেঙে দেয়া হয়েছে। এমন অভিযোগে স্বামী হিশাম চিশতি রাজধানীর বাড্ডা থানায় তমা মির্জার বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ করেছেন। ৬ ডিসেম্বর করা মামলায় তমা মির্জাকে এক নম্বর আসামি করা হয়েছে। এছাড়া তার বাবা-মা, ভাই এবং অজ্ঞাতপরিচয় একজনকেও আসামি করা হয়েছে।

তমা মির্জার স্বামী হিশাম চিশতির কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায় তার হাত ও মাথায় ব্যান্ডেজ করা। হিশাম চিশতি জানান, তমা মির্জার সঙ্গে তিনি আগেই বিচ্ছেদ চেয়েছিলেন, তার জের ধরেই হামলার শিকার হতে হয়েছে তাকে। হিশাম চান, তার এ ঘটনা থেকে লোকে শিক্ষা নিক।

তমা মির্জা গণমাধ্যমকে জানেয়েছেন, হাত খরচ না দিলেই স্বামী হিশাম চিশতি তাকে মারধর করেন। প্রতিরাতেই তার স্বামী তাকে নির্যাতন করেন। তমা বলেন, ও একটা সাইকো। তার সঙ্গে ঘর করা সম্ভব নয়। নির্যাতনের বিষয়ে তিনি বাড্ডা থানায় মামলা করেছেন বলেও উল্লেখ করেন তমা মির্জা।

নির্যাতনের বিষয়ে তমা মির্জা বলেন, হিশাম একজন সাইকো, মানসিক রোগী। কোনো কিছু সে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারে না। বিয়ের পর থেকে আমাকে বিভিন্নভাবে মানসিক অত্যাচার করেছে। শারীরিক নির্যাতনও করত টাকার জন্য। আমার উপার্জনের টাকা কেন আমি আমার বাবা-মাকে দেই তা নিয়ে ওর ব্যাপক সমস্যা। আমাকে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছে সে। হাত খরচের টাকা দিতে না পারলেই আমাকে মারধর করত। হিশাম চিশতীর করা মামলার এজাহারে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে উল্লেখ করে তমা মির্জা বলেন, ও জাস্ট মামলা করেই চলে গেছে। আমার মনে হয় ওর মামলার কোনো ভিত্তি নাই। আমরা যদি ওকে মারধর করতাম তাহলে ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশ ডাকতাম? সেদিন রাতে (৫ ডিসেম্বর) আমি ৯৯৯ ফোন করে পুলিশ ডেকেছি। এ কারণেও আমাকে মার খেতে হয়েছে। পুলিশ আসার পর ও রুম থেকে বের হচ্ছিল না।

জানা গেছে, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডীয় ব্যবসায়ী হিশাম সেখানকার রাজনীতিতে যুক্ত। বিবাদের কারণ হিসেবে হিশাম জানান, ২০১৮ সালে তমার সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। ২০১৯ সালের মে মাসে তাঁরা বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের পর তিনি জানতে পারেন, তমার আগেও দুবার বিয়ে হয়েছিল, যা তাঁরা গোপন করেছেন। এ ছাড়া তমার পরিবারকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতাও করে আসছিলেন হিশাম।

হিশাম করোনার সময় অসুস্থ মাকে দেখতে কানাডা থেকে দেশে এসেছিলেন তিনি। এরই মধ্যে স্ত্রী তমাকে নিয়ে দুবাইয়ে হানিমুনেও যান। হানিমুন থেকে ফেরার পর নানা বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে তীব্র বিবাদ শুরু হয়। হিশাম জানান, তমার আগের দুই বিয়ের খবর জেনে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। তবু সংসার টিকিয়ে রাখতে সব কিছু মেনে নিয়েছিলেন।

হিশাম চিশতি বলেন, তমাদের একটি স্বর্ণের দোকানের শেয়ার ছিল। আমার কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা ধার নিয়ে তারা সেখানে বিনিয়োগ করতে চেয়েছিলেন। সেখান থেকে আয় করে তারা সংসার চালাবেন বলে জানিয়েছিলেন। শুরুতে আপত্তি করলেও তমার চাপে তার পরিবারকে ওই টাকা দিতে তিনি বাধ্য হন। সেই টাকা দেয়ার পরও তাদের চাহিদা কমেনি। প্রতি মাসে সংসার খরচ বাবদ তারা মোটা অঙ্কের টাকা নিতে থাকেন। এর বাইরে তমার ভাইয়ের খরচ, বাবা-মায়ের চিকিৎসা, বাসার পোষা কুকুরের খাবার খরচসহ নানা খাতে, নানা অজুহাতে তারা টাকা চাইতেই থাকেন। বাংলাদেশে আসার পর বাসা ভাড়া নেয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা নেন তমা। স্ত্রী হিসেবে তিনি শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে থাকতে রাজি হচ্ছিলেন না। এসব নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে শুরু হয় তীব্র টানাপড়েন।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালে এম‌বি মা‌নিক প‌রিচা‌লিত ‘বলো না তুমি আমার’ ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে রুপালি পর্দায় অভিষেক ঘটে তমা মির্জার। ‘নদীজন’ ছবির পার্শ্ব-অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চল‌চ্চিত্র পুরস্কার জিতে নেন। গত বছর কানাডাপ্রবাসী হিশাম চিশতির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। গত বছর একটা লম্বা সময় কানাডায় কা‌টিয়ে দেশে ফিরেছেন তমা মির্জা। বর্তমানে দেশ টি‌ভিতে ‘তমার প্রিয়তমা’ নামে এক‌টি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করছেন।

 

টাইমস/জেকে/এসএন

Share this news on: