করোনা সচেতনতায় কমে গেছে ফ্লুয়ের প্রভাব

নতুন করোনা ভাইরাসের ফলে সৃষ্ট কোভিড-১৯ মহামারীর ফলে বিশ্বজুড়ে ভাইরাস বিরোধী সচেতনতা অন্য যেকোনো সময়ের থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে।  সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার নীতি, বারবার হাত ধোয়া এবং নাক-মুখ স্পর্শ না করার মত অভ্যাসগুলির ব্যাপক প্রসার ঘটেছে।

এর ফলে একদিকে যেমন করোনা মহামারীর চূড়ান্ত ধ্বংসলীলা ঠেকানো সম্ভব হয়েছে তেমনি সম্ভব হয়েছে ফ্লুয়ের মত ভাইরাস ঘটিত সংক্রমন ঠেকানোও। করোনা মহামারীর ফলে এবছর কমে গেছে ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমনও।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশনের মতে, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এবছর দেশটিতে ফ্লুয়ের সংক্রমণ তুলনামূলক ভাবে অনেকটাই কম।

প্রতিষ্ঠানটির তথ্যমতে, গতবছর এ সময়ের দেশটির প্রায় সবকটি অঞ্চলে ফ্লু মারাত্মক হারে ছড়িয়ে পড়েছিল। এর ফলে ৪৫টি রাজ্যকে রেড জোন হিসেবে ঘোষণা করতে হয়েছিল। অন্যদিকে এবছর দেশজুড়ে মাত্র ১৫৫ জনের ফ্লু শনাক্ত করা হয়েছে।

সিডিসি’র ফ্লু প্রোগ্রামের প্রধান লিনিট ব্র্যামার এ বিষয়ে বলেন, “এই মুহুর্তে দেশের কোথাও ফ্লুয়ের বর্ধিত মাত্রা লক্ষ করা যাচ্ছে না। সব অঞ্চলেই এর প্রভাব অনেক অনেক কম।

গত বছর এ সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ফ্লু আক্রান্ত হয়ে ৭৮জন শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। সেখানে এ বছর এখন পর্যন্ত মাত্র ১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

সিডিসির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত ফ্লুয়ের প্রাদুর্ভাব খুবই সামান্য, তবে কিছুদিনের মধ্যে তা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

গবেষকগণ বলছেন, করোনাভাইরাস ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ যে সব পূর্ব সতর্কতা অবলম্বন করেছেন তা ফ্লুয়ের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে। কারণ ফ্লু কিংবা করোনাভাইরাস প্রায় একই ভাবে ছড়িয়ে পড়ে তাই এর সংক্রমণ ঠেকানোর পদ্ধতিগুলিও একইরকম।

এসব ভাইরাস সাধারণত হাঁচি, কাঁশি বা মুখ ও নাক থেকে নিঃসরিত ক্ষুদ্র ভাইরাস কণার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যা বাতাসে ভেসে থাকা অবস্থায় শ্বাস গ্রহণের মধ্যদিয়ে মানবদেহের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারে। এছাড়াও এই কণাগুলি কোন অবতলে পড়ে থাকা অবস্থায় স্পর্শ করলে তা হাতে লেগে যায় এবং নাক, মুখ বা চোখ স্পর্শ করলে তা হাত থেকে দেহের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে।

করোনা মহামারীর পাশাপাশি ফ্লু ভাইরাস যদি ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ত তাহলে অবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইড়ে চলে যেতে পারে বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। তবে মানুষের করোনা সচেতনতা ফ্লু ভাইরাসের সংক্রমণ হ্রাস করতেও ভূমিকা পালন করছে। যা নিঃসন্দেহে একটি সুসংবাদ। তথ্যসূত্র: সিএনএন

 

টাইমস/এনজে

Share this news on: