ঢাকা কলেজের ইংরেজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক শাহেদ রহমান। বয়স ৬৩ ছুই ছুই। এই বুড়ো বয়সেও বইমেলায় আসতে ভুলেন না।
প্রতিবারের মতো এবারও বইমেলায় এসেছিলেন তিনি। কিন্তু মেলায় প্রচণ্ড ভিড় দেখে বাসায় ফিরে যেতে মনোস্থির করেন।
টিএসসিতে মেলার প্রবেশ পথ থেকে ফিরে যাওয়ার সময় শাহেদ রহমান দেখেন,একদল স্বেচ্ছাসেবী হুইচেয়ার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
পরে তিনি জানতে পারেন, বইমেলায় বিনামূল্যে বয়স্ক আর প্রতিবন্ধীদের জন্য এই হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এরপর হুইলচেয়ারে চেপেই বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখেন অবসরপ্রাপ্ত এই শিক্ষক।
শাহেদ রহমান বাংলাদেশ টাইমসকে বলেন, নতুন বইয়ের স্বাদ নিতে দ্বিতীয় দিনই বইমেলার সামনে রিকশা নিয়ে আসি। কিন্তু প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে মেলার ভেতরে যেতে সাহস পাইনি। বয়স হয়েছে, মেরুদণ্ডেও ব্যথা। হেঁটে চলাচলে চিকিৎসকের নিষেধ আছে।
‘হঠাৎ হুইলচেয়ার সার্ভিস দেখতে পাই। প্রথমে দেখে অবাক হয়েছিলাম। তারা আমাকে বিনামূল্যে সার্ভিস দিলো। আমাকে তারা স্টলে স্টলে নিয়ে সব ঘুরে দেখিয়েছে।’
জানা গেছে, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও প্রবীণদের মধ্যে যারা পায়ে হেঁটে চলাচল করতে পারেন না, তাদের জন্য বইমেলায় হুইলচেয়ারের বিশেষ সেবা দিচ্ছে সুইচ বাংলাদেশ।
চতুর্থ বারের মতো সংগঠনটির পক্ষ থেকে এই সেবা দেওয়া হচ্ছে। গত বছর প্রায় দুইশ জন ব্যক্তিকে সেবা দিয়েছিল সংগঠনটি।
সংগঠনটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করেন।
সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবী আবু নোমান বাংলাদেশ টাইমসকে বলেন, শিশু থেকে বৃদ্ধরা সব শ্রেণির মানুষ আসে বইমেলায়। তবে শারীরিক প্রতিবন্ধী ও বয়স্করাও মেলায় আসতে চান। তাদের কথা মাথায় রেখেই সংগঠনের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মোড় ও দোয়েল চত্বরের প্রবেশ মুখে এই সেবা দেয়া হচ্ছে। প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পযর্ন্ত এবং শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পযর্ন্ত এই সেবা দেওয়া হয়।
টাইমস/টিআর/এক্স