বাইডেন-পুতিন বৈঠক : প্রত্যাহার করা রাষ্ট্রদূতদের ফেরাতে রাজি দুপক্ষই

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখোমুখি বৈঠক শেষ হয়েছে। ২০১৮ সালের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম অনুষ্ঠিত হলো। জেনেভায় অনুষ্ঠিত এই বৈঠকের প্রশংসা করা হলেও দুই দেশের সম্পর্কের উন্নয়নে তা ভূমিকা রাখবে সামান্যই।

বৈঠক শেষে জানা গেল, দুই দেশের প্রেসিডেন্টই প্রত্যাহার করে নেয়া রাষ্ট্রদূতদেরকে আবার একে অপরের দেশে ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়েছেন।
এ বছরের শুরুতে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতির জেরে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহার করেছিল।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈঠকে নানা বিষয়ে আলোচনা হলেও দুই দেশের এই রাষ্ট্রদূত ফেরানোর বিষয়টিই মুখ্য ছিল। আর তাতেই একমত হন তারা। বৈঠকের পর আলাদা আলাদাভাবে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন এই দুই নেতা।

প্রথমে সংবাদ সম্মেলন করে পুতিন বলেছেন, বৈঠক খুবই গঠনমূলক ও ফলপ্রসূ হয়েছে। এ সময় বাইডেনকে একজন অভিজ্ঞ রাষ্ট্রপ্রধান এবং তার পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে অনেকটাই ভিন্ন বলে উল্লেখ করেন পুতিন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দুক সহিংসতা ও মানবাধিকার নিয়ে সমালোচনা করেন তিনি।

পুতিন জানান, বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রাশিয়ায় কারাবন্দি মার্কিন নাগরিকের প্রসঙ্গ টেনেছেন। রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, বন্দি বিনিময়ের ক্ষেত্রে ওয়াশিংটনের সঙ্গে একটি চুক্তি হতে পারে। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি।

তবে সাইবার সিকিউরিটি, ইউক্রেন ইস্যু এবং রাশিয়ার বিরোধী নেতা আলেক্সেই নাভালনি-সহ বেশ কয়েকটি ইস্যুতে ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারেনি উভয়পক্ষ। নাভালনি বর্তমানে রাশিয়ার একটি কারাগারে আড়াই বছরের সাজা খাটছেন। তার শরীরিক অবস্থা বেশ খারাপ বলে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল ভবনে হামলা এবং নিগ্রোদের অধিকার বিষয়ক আন্দোলন ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’-এর মতো কোনো ঘটনা রাশিয়া তার নিজের ভূখণ্ডের ভেতরে চায় না বলেও মন্তব্য করেন পুতিন।

তবে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনের বিষয়ে পুতিনের মন্তব্যকে ‘হাস্যকর’ বলে আখ্যায়িত করেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। তিনি বলেন, মানবাধিকারের বিষয়ে তার দেশ সবসময় সোচ্চার থাকবে।

বৈরী এই দুই দেশের সম্পর্ক গত কয়েক দশকের মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে তলানিতে পৌঁছেছে। গত মার্চে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রুশ প্রেসিডেন্টকে খুনি বলেও মন্তব্য করেছিলেন। মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপ, সাইবার হামলা, ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া দখল নিয়ে দুই দেশের সম্পর্কে নজিরবিহীন অবনতির মাঝে মার্কিন প্রেসিডেন্টের অনুরোধে জেনেভায় বাইডেন-পুতিন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো।

 

টাইমস/এসজে

Share this news on:

সর্বশেষ