মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনায় দেশটিতে অস্ত্র বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। শুক্রবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহিত এক প্রস্তাবে দেশটির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখলকারী সামরিক জান্তার প্রতি নিন্দাও জানানো হয় বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
অং সান সু চিসহ সব রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দাবির পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দমাতে সহিংসতা না চালানোর আহ্বানও জানিয়েছে জাতিসংঘ। আইনগতভাবে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাব মানা বাধ্যতামূলক না হলেও, রাজনৈতিকভাবে এটি গুরুত্বপূর্ণ।
মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত ক্রিস্টিন স্কোরানের বার্গেনার সাধারণ পরিষদে বলেছেন, বড় ধরনের গৃহযুদ্ধের সম্ভাবনা সেখানে বাস্তব হয়ে দেখা দিয়েছে। এক্ষেত্রে সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ কমে আসছে। এই প্রস্তাবের পক্ষে সাধারণ পরিষদের ১১৯টি দেশ সমর্থন জানিয়েছে। শুধুমাত্র বেলারুশ বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। মিয়ানমারে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র বিক্রি করা রাশিয়া ও চীনসহ ৩৬টি দেশ ভোট দানে বিরত ছিল।
ভোটদানে বিরত থাকা দেশগুলোর মধ্যে কোন কোন প্রতিনিধি বলছেন, এটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। অন্যরা বলছেন, এই প্রস্তাবে চার বছর আগে মিয়ানমারের ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলমান জনগোষ্ঠীকে বিতাড়িত করার বিষয়ে কোন কথা বলা হয়নি।
জাতিসংঘে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ওলফ স্কোগ বলেছেন, এই প্রস্তাবের মাধ্যমে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা, তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার এবং নিজেদের জনগণের ওপর সহিংসতাকে তুলে ধরা হয়েছে। সেই সঙ্গে আড়াল থেকে এসব বিষয় বিশ্বের নজরে আনা হয়েছে।
তবে মিয়ানমারের জাতিসংঘ বিষয়ক দূত কাইউ মোয়ে তুন, যিনি জাতিসংঘে দেশটির নির্বাচিত সরকারের প্রতিনিধিত্ব করছেন, তিনি জাতিসংঘে এই প্রস্তাব পাস করতে এতো সময় লাগায় অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে একে 'দুর্বল প্রস্তাব' বলে বর্ণনা করেছেন।
সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকেই ৭৫ বছর বয়সি সু চি গৃহবন্দি রয়েছেন এবং তার সম্পর্কে এরপর থেকে খুব কমই জানা গেছে। এর মধ্যে শুধু তাকে আদালতে হাজির হতে দেখা গেছে।
অভ্যুত্থানের পর সামরিক জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ নিষ্ঠুরভাবে দমন করে চলেছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভকারী, কর্মী ও সাংবাদিকদের আটক করা হয়েছে।
গত মাসে, মিয়ানমারের জান্তার বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সাধারণ পরিষদকে একটি প্রস্তাব পাসের অনুরোধ জানায় হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
টাইমস/এসজে