বাংলাদেশে ফটোগ্রাফি বিষয়ক প্রথম ব্যক্তিগত লাইব্রেরি গড়েছেন যিনি

সাইফুল আমিন কাজল, বাংলাদেশে ফটোগ্রাফি বিষয়ক প্রথম ব্যক্তিগত লাইব্রেরি গড়েছেন যিনি। রাজধানীর ধানমন্ডিতে প্রতিষ্ঠিত এ লাইব্রেরীর পৃষ্ঠপোষক তিনি। 

পাঁচ শতাধিক বই নিয়ে সেখানে সংগৃহিত আছে দেশ-বিদেশের ফটোগ্রাফি বিষয়ের বিভিন্ন বই, ম্যাগাজিন , ক্যাটালগ এবং অন্যান্য প্রকাশনা।

২০১৫ সালে প্রথমে তিনি ফটোগ্রাফির বই সংগ্রহ শুরু করেন বিভিন্ন এক্সিবিশনের ক্যাটালগের মাধ্যমে, এরপর ২০১৭ সাল থেকে বিভিন্ন ফটোগ্রাফারদের থেকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে বই সংগ্রহের মাধ্যমে শুরু করেন লাইব্রেরি।

কাজল বলেন, "২০০৯ সালে আমি যখন বিডিআর ট্রাজেডিতে আহত হই, ছবি তোলতে যেয়ে গুলিবিদ্ধ হই, আমি প্রায় সাড়ে চার বছর বিছানায় ছিলাম। ২০১৫ তে আবার যখন অফিস করা শুরু করি আবার চলাফেরা শুরু করি। মোবাইলে এবং ভাইয়ের ক্যামেরা দিয়ে আবার ফটোগ্রাফি শুরু করি।"
 
তিনি বলেন, "ফটোগ্রাফির এক্সিবিশনগুলো ছিল আমার ভালোলাগার একটি জায়গা। এক্সিবিশন গুলোতে যেতাম ক্যাটালগ সংগ্রহ করতাম, ঢাকার বাইরে যেগুলো হতো ওগুলো ফোন করে বা কুরিয়ার করে যেভাবে হোক আমি সংগ্রহ করতাম।"

"২০১৯ এ বিভিন্ন ফটোগ্রাফারদের থেকে ব্যক্তিগতভাবে তাদের বই সংগ্রহ করা শুরু করি। এরপর ২০২০ সালে এই নেশাটা চূড়ান্ত আকারে ধারণ করে। কারণ আমি পাগলের মত সংগ্রহ শুরু করি। নীলক্ষেত, গুলিস্থান, রকমারি ও ফেসবুক যতভাবে কালেকশন করা যায়।"

এই লাইব্রেরী তিনি মূলত গড়ে তুলেছেন তরুণ প্রজন্মের ফটোগ্রাফারদের জন্য, ফটোগ্রাফি বিষয়ে তাদের বই পড়ার আগ্রহ বৃদ্ধি করার জন্য।

তিনি বলেন, "ফটোগ্রাফি বিষয়ে তাদের বই পড়ার আগ্রহ বৃদ্ধি করার জন্য আসলে এই লাইব্রেরি করা। আমাদের তরুণ প্রজন্মে ফটোগ্রাফারদের জন্য। এই প্রজন্ম যাদের মধ্যে বই পড়ার আগ্রহ খুব কম দেখি।"

"আমাদের পূর্বে ফটোগ্রাফারদের জানা এবং তাদের কাজ সম্বন্ধে আগ্রহ, এগুলো আমি খুব কম উপলব্ধি করি যুব সমাজের মধ্যে। এর মাধ্যমে তাদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি করা এবং বই পড়াটা ও বই কিনে পড়াটা একেবারেই অভ্যাস নেই আমাদের এখন।"

"হাজার হাজার টাকা দিয়ে বিভিন্ন কনটেস্টের ছবি দেয়, হাজার টাকা এমনিতেই খরচ করে ফেলে কিন্তু যখন ৫০০ টাকা দিয়ে একটা বই কিনতে বলি, তখনি বিভিন্ন উসিলা দিয়ে দেখা যায় যে এড়িয়ে যাচ্ছে, মানে টাকা নাই এসব বলে। তাদের মধ্যে বই পড়ে জানার আগ্রহটা সৃষ্টি করাটাই আমার মূল উদ্দেশ্য।"

ফটোগ্রাফি বিষয়ক এমন অনেক বই আছে যেটি তার কাছে ছাড়া দেশের আর কারো কাছেই নেই।
মৃত্যুর পূর্বে এই লাইব্রেরী স্থায়ীভাবে কোথাও রেখে যাওয়ার ইচ্ছে সাইফুল আমিনের।

তিনি আরো বলেন, "মৃত্যুরপূর্বে জন্য এটা (লাইব্রেরি) যেন কোথাও আমি দিয়ে যেতে পারি যেখানে তরুণ ফটোগ্রাফাররা আসবে, দেখবে ও সারা দিন পড়বে সংগ্রহ করতে পারবে।"

তার এই লাইব্রেরী যে কেউ পরিদর্শন করার সুযোগ রয়েছে, আছে সেখানে বসে বই পড়ার ব্যবস্থা।

ব্যক্তিউদ্যোগে তার এই লাইব্রেরি তরুন প্রজন্মের ফটোগ্রাফারদের উদ্বুদ্ধ করবে ফটোগ্রাফি নিয়ে নতুন কিছু জানার আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিতে, এমনটাই মনে করছেন অনেকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বৃষ্টির দিনে ঘরের যত্ন নেবেন যেভাবে May 06, 2024
img
ঝিনাইদহ-১ আসনের উপনির্বাচন স্থগিত May 06, 2024
img
মিল্টনের আশ্রমে থাকা শিশু-বৃদ্ধদের দায়িত্ব নিচ্ছে শামসুল হক ফাউন্ডেশন May 06, 2024
img
১৪ দিনে হিটস্ট্রোকে মৃত্যু ১৫ জনের : স্বাস্থ্য অধিদপ্তর May 06, 2024
img
সম্পদ অর্জনে এমপিদের চেয়ে চেয়ারম্যানরা এগিয়ে, টিআইবির বিশ্লেষণ May 06, 2024
img
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ১০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি May 06, 2024
img
রাজধানীর যেসব স্থানে বসবে কোরবানির পশুর হাট May 06, 2024
img
সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে, ধোঁয়া দেখলেই পানি স্প্রে May 06, 2024
img
দুপুরের মধ্যে ৮০ কিমি. বেগে বৃষ্টির আভাস, নৌ বন্দরে ২ নম্বর সংকেত May 06, 2024
img
হামাসের হামলায় ইসরায়েলের ৩ সেনা নিহত, বন্ধ কেরাম শালোম ক্রসিং May 06, 2024