বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার দাবিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বিএনপি জোট থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে। আবেদন আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
রোববার (২১ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ২০ দলীয় জোটের শরিক পাঁচটি দলের নেতারা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিএনপির ২০ দলের জোটের পাঁচ সদস্য এখানে এসেছিলেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহীমের নেতৃত্বে। তাদের আবেদন ছিল, খালেদা জিয়া অসুস্থ, তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন, তিনি একদম জীবনের শেষ প্রান্তে এসেছেন।
কাজেই তাকে আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া যায় কিনা। প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের একটি আবেদন এখানে নিয়ে এসেছেন।
তিনি বলেন, আমি বলেছি, এর আগেও খালেদা জিয়ার ছোট ভাই একটি আবেদন করেছিলেন। সেটিও আমি আইন মন্ত্রণালয়ে মতামতের জন্য পাঠিয়েছিলাম।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিএনপি চাইলে বিদেশ থেকে ডাক্তার বা কনসাল্টেন্ট আনতে পারে। আমাদের হাসপাতালগুলো ওয়েল ইক্যুইপ্ট। বিদেশ থেকে যে কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এখানে আসতে পারেন। বিদেশি ডাক্তার আসলে সেই চিকিৎসা ওখানে করা যায় সেই চিকিৎসা এখানেও করতে পারেন।
কোকো, একুশে আগস্ট সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠে আরেকটা মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপনের কথা ওনারা বলেছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা উদাহরণ কিংবা আইন কোনো কিছুই নয়। আইন অনুযায়ী কোনো সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছা করলে করতে পারেন, এটা ওনারা বলে গেছেন। কিন্তু আইনের ভাষায় বলতে গেলে এটার কোনো স্কোপ নেই।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেমন করে ছুটে গিয়েছিলেন কোকোর ইন্তেকালের পর। আমি তাকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছি যে, প্রধানমন্ত্রী কিন্তু অনেকগুলো উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। কোকো যখন ইন্তেকাল করলেন, তখন প্রধানমন্ত্রী দৌঁড়ে ছুটে গিয়েছিলেন তাকে সমবেদনা জানাতে। সেইদিন কিন্তু খালেদা জিয়ার বাসভবনের গেটটিও খোলা হয়নি। এ সবই ওনারা জানেন। তারপরও তারা বলেছেন যে, একটা উদাহরণ সৃষ্টি করার জন্য। যেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানাই। অতীতে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে। ওনার সঙ্গে যেসব ঘটনা ঘটেছে সেগুলোকে ভুলে গিয়ে যেন কাজটা করা হয়।
চিঠি কি আজই পাঠানো হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা প্রক্রিয়াধিন থাকবে। প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পাঠানো হবে।
বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীকের নেতৃত্বে এই দলে আরও ছিলেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ক্বারী এম এ তাহের, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজজামান ফরহাদ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অসুস্থ অবস্থায় ১৩ নভেম্বর রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নানা জটিল রোগে আক্রান্ত সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে সিসিইউতে রয়েছেন।
তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ দেন। বিষয়টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করতেই এই পাঁচ নেতা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।