আজ বিশ্ব কিডনি দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হবে দিবসটি। এবারের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘সুস্থ কিডনি সবার জন্য- জ্ঞানের সেতুবন্ধনে সাফল্য’।
প্রতি বছর মার্চের দ্বিতীয় বৃহস্পতিবার এই দিবসটি পালিত হয়। কিডনি রোগে আকান্ত হয়ে নানা জটিলতায় ভুগছে দেশের প্রায় দুই কোটি মানুষ। ২০১৮ সালে কিডনির জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদের বাঁচাতে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন পাশ হলেও, সচেতনতার অভাবে তার বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না। এমন বাস্তবতায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে 'বিশ্ব কিডনি' দিবস।
বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায়, দেশের দুই কোটির বেশি মানুষ কিডনির নানা রোগে ভুগছে, যাদের অন্তত এক লাখ রোগীর ডায়ালাইসিস দরকার। কিন্তু, তা করাতে পারছেন মাত্র ২০ শতাংশ রোগী।
কিডনি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. হারুন অর রশীদ বলেন, '৮০ ভাগ রোগী ডায়ালাইসিস চিকিৎসার কোনো সুযোগ-সুবিধা পায় না। চিকিৎসার অভাবে তারা মৃত্যুবরণ করে।'
চিকিৎসকরা বলছেন, ৭০ থেকে ৮০ ভাগ মানুষ কিডনি নষ্ট হওয়ার আগে বুঝতেই পারে না যে তিনি আক্রান্ত। আর যাদের কিডনি প্রতিস্থাপন দরকার তাদের এক শতাংশেরও কম মানুষ তা করাতে পারছেন। এর পেছনে রয়েছে ডোনারের অভাব। এমন অবস্থায় কিডনি প্রতিস্থাপনের হার বাড়াতে ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে, মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন পাশ হয়। যাতে ডোনার হিসেবে মা, বাবা, ভাই বোনের সাথে দাদা-দাদি, নানা-নানী, চাচা, মামা, চাচাতো-মামাতো-খালাতো-ফুপাতো ভাই-বোনদেরও যোগ করা হয়।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি অ্যান্ড ইউরোলজীর পরিচালক প্রফেসর ডা. মিজানুর রহমান বলেন, 'আমাদের দেশে বাৎসরিক দুইশ' থেকে আড়াইশ'র বেশি কিডনি প্রতিস্থাপন হচ্ছে না। বর্তমানে দেশে সরকারিভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং বেসরকারিভাবে দু'টি প্রতিষ্ঠানে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। এছাড়া সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল-সিএমএইচ এ কিডনি প্রতিস্থাপনের সেবা চালু করা হয়েছে।'
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইনে ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্টের কথা বলা আছে। অর্থাৎ অনুমতি সাপেক্ষে আইসিইউতে ব্রেন ডেথ ঘোষণা করা রোগীর কিডনি, লিভারসহ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ রোগীকে সংযোজন করা যাবে। এদিয়ে বাঁচানো সম্ভব একাধিক মৃত্যুপথ যাত্রীকে। কিন্তু সচেতনতার অভাবে এখনও তা শুরু হয়নি। আর বেশিরভাগ মানুষের আইসিইউতে ব্রেন ডেথ সম্পর্কে কোনও ধারণাই নেই।
ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট আইন বাস্তবায়ন করতে হলে সরকারি উদ্যোগের সাথে জনসচেতনতা তৈরি করা জরুরি।