দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার আহ্বানের মধ্য দিয়ে শেষ হলো ঢাকা মিডিয়া সামিট

নতুন তথ্য প্রযুক্তি, নতুন ব্যবসায়িক মডেল গ্রহণ এবং দেশের জনগণের আস্থা অর্জনের মাধ্যমে আরও মানসম্পন্ন ও দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার আহ্বানের মধ্য দিয়ে রোববার সাংবাদিকতার ভবিষ্যৎ বিষয়ক চার দিনব্যাপী সম্মেলন শেষ হয়েছে।

ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ-এর মিডিয়া স্টাডিজ অ্যান্ড জার্নালিজম (এমএসজে) বিভাগ এবং ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিসার্চ (আইএএমসিআর) বাংলাদেশ যৌথভাবে "ঢাকা মিডিয়া সামিট ২০২২" শিরোনামের আন্তর্জাতিক সম্মেলনটি আয়োজন করে।

সম্মেলনটির সমাপনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এমএসজে বিভাগের প্রধান অধ্যাপক জুড উইলিয়াম হেনিলো, যমুনা টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিবেদক মহসিন উল হাকিম, বিশিষ্ট ফটোগ্রাফার ড. শহিদুল আলম, মে অ্যান চুয়া, লিন্ডা ক্যাটন্ডিগ-গার্সিয়া, থেরেসি সান দিয়েগো টরেস, জেনেস অ্যান জে এলাও।

অনুষ্ঠানে শহিদুল আলম বলেন, সাংবাদিকতা সবসময়ই একটি চ্যালেঞ্জিং পেশা। সাংবাদিকরা বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের কাছ থেকে অত্যাচারের সম্মুখীন হন।
অত্যাচারীরা অত্যাচারী হবে। কিন্তু এটা আমাদের সম্মিলিত নীরবতা যা স্বৈরাচারী শাসককে আমাদের অত্যাচার করতে সক্ষম করে। এখানেই আমরা সাংবাদিকরা আসি। জনগণের পক্ষে কথা বলা আমাদের দায়িত্ব,” তিনি বলেন।

এদিকে মহসিন উল হাকিম বলেন, সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকরা নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেলেও উদ্বুদ্ধ, দক্ষ ও মেধাবী তরুণদের জন্য পেশার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।

অনুষ্ঠানের শেষ দিনে ৩০টি বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হয় এবং একটি গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ মাধ্যমের প্রতি আস্থাকে প্রভাবিত করে এমন বিষয় নিয়ে একটি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন সাংবাদিকতা প্রভাষক আমিনুল ইসলাম বলেন, দেশের সংবাদ মাধ্যমের প্রতি তরুণদের আস্থার মাত্রা খুবই কম।

তিনি বলেন, মালিকদের ব্যবসায়িক স্বার্থ এবং রাজনৈতিক দলের প্রতি পক্ষপাতদুষ্টতা, সংবাদে যথার্থতার অভাব, চাঞ্চল্যকর সংবাদ এবং তথ্য এবং ক্লিকবেট শিরোনাম ব্যবহার বিশ্বাসের কিছু মূল কারণ। 

অন্য একটি গবেষণাপত্রে সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. আব্দুল কাবিল খান বলেন, দেশের সংবাদ মাধ্যমের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে একটি হাতিয়ার হতে পারে তথ্যভিত্তিক সংবাদ কাহিনী তুলে ধরা।

আরেকটি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করার সময়, সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সরকার বারবাক কারমাল বলেন, দ্রুত পরিবর্তনশীল ডিজিটাল মিডিয়া পরিবেশে টিকে থাকতে গবেষণার মাধ্যমে পাঠক-দর্শক-শ্রোতাদের সম্পর্কে যথাযথ ধারণা গ্রহণ ও তাদের প্রত্যাশা মাফিক আধেয় উপস্থঅপনের ওপর জোর দেন। 

একটি গোলটেবিল আলোচনায় ফিলিপিনো সাংবাদিক জেনেস অ্যান জে. এলাও বলেন যেকোনো কঠিন সময় সমাজে সাংবাদিকতার গুরুত্বের বিষয়টি প্রকট হয়। কেননা সাংবাদিকগণ সবসময় সত্য কথা বলারই চেষ্টা করেন। 

এই সম্মেলনে গত চার দিনে ১০ টি সহযোগী অংশীদার, ১৭টি দেশের গবেষক এবং শিক্ষাবিদদের ৫৮টি গবেষণাপত্র উপস্থাপনা, পাঁচটি গোলটেবিল আলোচনা, তিনটি মাস্টার ক্লাস এবং একটি গ্রন্থ আলোচনা হয়।

Share this news on: