তীব্র গরমের এই রমজানে নিজেকে পানিশূন্যতা মুক্ত রাখবেন যেভাবে

রোজায় দীর্ঘ সময় পানাহার থেকে বিরত থাকতে হয়। এতে এমনিতেই মানুষ পানিশূন্যতাসহ নানা শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত হতে পারেন। তার ওপর এ বছর চৈত্র মাসের দীর্ঘ ও উত্তপ্ত দিনের বেলা রোজা রাখতে গিয়ে পনিশূন্যতায় ভোগার আশঙ্কা আরও বেশি থাকবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের কনসালটেন্ট সাজ্জাদ হোসেন বলেন, পানিশূন্যতার কারণে হার্ট রেট কিংবা প্রেশার কমে গুরুতর বিপত্তি হতে পারে।

তিনি বলেন, যারা রোজা পালন করেন তাদের রোজা পালনের সাথে সাথে পানিশূন্যতা যেন কোনোভাবে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বিশেষ করে বয়স্কদের। নিয়মমতো যথেষ্ট পানি পান করলে তারা এ সমস্যা থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন। 

ঢাকার বেসরকারি ফরাজি হাসপাতালের পুষ্টিবিদ রুবাইয়া রীতি বলেন, এবার রোজার সময়টায় গরম পড়বে বেশি। সে কারণে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে অবশ্যই পানিশূন্যতা থেকে রক্ষা পেতে এবং ফিট থাকার জন্য দিনে আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করতে হবে।

ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত সময়ে যথেষ্ট পরিমাণ পানি পান করতে হবে। একই সাথে শরীরচর্চাও গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে যারা তারাবি নামাজ পড়েন সেটি তারা নিয়মিত পড়লে উপকৃত হবেন বলেন তিনি। 

তার মতে ইফতার থেকে আরম্ভ করে সেহরি পর্যন্ত এমন খাবার নির্বাচন করতে হবে যেসব খাবারে পানির পরিমাণ বেশি থাকে।

অনেকেই ইফতারের পর আর খেতে চান না। এটি ঠিক নয়। রাতের খাবার খেতে হবে পরিমিত মাত্রায় এবং সেহরিও খেতে হবে। তাহলে পানির ঘাটতি কম হবে।

রোজার সময় যারা রোজা পালন করেন তাদের দিনের বেলায় পানাহারের সুযোগ নেই বলে দীর্ঘ সময় পানি পান করতে পারেন না। অন্যদিকে ঘাম, প্রস্রাব ও শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে প্রচুর পানি শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। এ কারণে শরীরে পানিশূন্যতার সম্ভাবনা তৈরি হয়।

চিকিৎসক সাজ্জাদ হোসেন ও পুষ্টিবিদ রুবাইয়া রীতি উভয়ই বলছেন যে শরীর ফিট রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে এবং এর আর কোনো বিকল্প নেই।

তবে সাধারণ সময়ে প্রতি ঘণ্টায় অন্তত এক গ্লাস পানি খাওয়া উচিত একজন ব্যক্তির। ফলে তিনি যদি রোজা থাকেন তাহলে দিনের সময়টুকুতে না খাওয়া পানি তাকে ইফতার থেকে সেহরির সময়কালে গ্রহণ করতে হবে।

চিকিৎসকরা সাধারণত বয়স, উচ্চতা ও ওজন ভেদে এক ব্যক্তিকে দিনে ১২ থেকে ১৬ গ্লাস পর্যন্ত পানি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

যে কারণে পানিশূন্যতা দেখা দেয়

> দীর্ঘ সময় ধরে পানি না পান করার কারণে শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়ে
> খাবার তালিকায় পানিসমৃদ্ধ খাবার না রাখা
> জ্বর বা ডায়রিয়ার মতো অসুস্থতাজনিত কারণে
> অতিরিক্ত ভাজা পোড়া জাতীয় খাবারের কারণেও পানিশূন্যতা হতে পারে
> ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত সময়ে পর্যাপ্ত পানি পান না করা
> ইফতারের পর অতিমাত্রায় চা কফি খেলে
অতিরিক্ত রোদ বা গরমে থাকার কারণে

পানিশূন্যতার লক্ষণ

শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়লে জিহ্বা দেখে সহজে বোঝা যায় কারণ জিহ্বা শুকিয়ে যায়। এছাড়া অনেকের চোখ গর্তে চলে যায় এবং দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে। তাছাড়া শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে ও কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা তেরি হয়।

পানিশূন্যতা থেকে মুক্ত থাকবেন কিভাবে?

> ইফতার ও সেহরির মধ্যকার সময়ে পর্যাপ্ত পানি পান করা
> সহজে হজম হয় এমন খাবার খাওয়া
> ইফতারে ফলের রস ও ফলের পরিমাণ বেশি রাখা
> সরাসরি রোদে না যাওয়া
> অতিরিক্ত খাবার না খাওয়া
> প্রয়োজনে ডাবের পানি বা খাবার
> স্যালাইন পান করা
> হালকা শরীর চর্চা করা

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ইন্টারনেট ব্যবহারে এশিয়ায় বেশি পিছিয়ে বাংলাদেশের নারীরা May 18, 2024
img
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা নেই : খুরশিদ আলম May 18, 2024
img
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকরা কেন ঢুকবেন, প্রশ্ন ওবায়দুল কাদেরের May 18, 2024
img
দুই জেলায় বজ্রপাতে ৫ জনের মৃত্যু May 18, 2024
img
স্বাধীনতাবিরোধীরা সুযোগ পেলেই ছোবল মারতে চায় : রাষ্ট্রপতি May 18, 2024
img
সরকারের ধারাবাহিকতার কারণে এত উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে : কাদের May 18, 2024
img
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবল ঝড়ে সাতজনের প্রাণহানি May 18, 2024
img
রাঙামাটিতে দুর্বৃত্তের গুলিতে ইউপিডিএফ কর্মীসহ নিহত ২ May 18, 2024
img
সৌদিতে চলতি বছরে প্রথম বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু May 18, 2024
img
ঢাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি, জনজীবনে স্বস্তি May 18, 2024