কেমন আছেন দুবাইয়ে বাংলাদেশিরা !!

প্রবাস মানেই স্বপ্ন, এটা ঠিক নয়। প্রবাস মানেই কষ্ট, এটাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সত্য। টাইমস্ ইনভেস্টিগেশনকে এভাবেই নিজের কষ্টের কথা জানালেন দুবাইয়ের প্রবাসী বাংলাদেশি মুন্সিগঞ্জের মোহাম্মদ রানা। অথচ আমরা জানি প্রবাস মানে স্বপ্ন। প্রবাস মানেই অর্থবিত্ত। বাড়ি-গাড়িসহ অনেক কিছু। রানা বলেন, প্রবাসী ১০০ বাংলাদেশির মধ্যে হয়তো ২০ জন ভালো আছেন। ৮০ জনই আছেন চরম দুঃখ কষ্টে। নতুন যারা দুবাইয়ে যাচ্ছেন তারাতো রীতিমতো রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন। রাত কাটাচ্ছেন খোলা আকাশের নীচে। অথচ এক সময় বিদেশি মানেই ছিল দুবাই। সেই দুবাই স্বপ্ন এখন অনেকের কাছেই দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছে।
 
দুবাই প্রবাসী রানা জানান, যে কারখানায় কাজ করেন সেই কারখানারই ওপরের একটি কক্ষে থাকেন সাতজন। চার পাঁচ হাত প্রস্ত আর ১৪-১৫ হাত লম্বা এই কক্ষের ভাড়া দিতে হয় বাংলাদেশি টাকায় ৬০ হাজার টাকা। পানি ও বিদ্যুৎ বিল দিতে আরও প্রায় ৩০ হাজার টাকা। মাসে ৯০ হাজার টাকার মতো দিতে হয় শুধু থাকার জন্য। এরপর খাওয়া দাওয়া আর বাড়ির জন্য পাঠানোর টাকা যোগার করতে হয়। 
 
দুবাইয়ের আরেক প্রবাসী বাহ্মনবাড়িয়ার সুমন জানান, আমাদের কষ্টগুলো যদি জানাই, কী লাভ হবে। বর্তমানে যারা দুবাইয়ে আসতে চাইতেছেন তারাতো জানেননা প্রবাস মানে কতো কষ্ট। কতটা সমস্যা হয় প্রবাসে জীবনযাপন। আমাদের জীবনটা হচ্ছে মোমবাতির মতো। অন্ধকারের মধ্যে বিদুৎ চলে গেলে যেমন মোমবাতি জ্বালাই। মোমটা জ্বলে সবাইকে আলো দিয়ে নিজে গলে গলে শেষ হয়ে যায়। আমাদেরও একই অবস্থা।
 
সুমন বলেন, প্রবাসীদের টাকায় বাংলাদেশ এতো উন্নত হয়। কিন্তু নিজ দেশ থেকে আমরা সম্মানটা পাইনা। বাংলাদেশে যাওয়া আসার সময় বিমানবন্দরে খুবই অমানবিক আচরণ করা হয় আমাদের সঙ্গে। এদের দুর্ব্যবহারে মনে হয় আমরা বাংলাদেশের নাগরিকই না।
 
মুন্সিগঞ্জের রায়হান বলেন, এই বয়সে আমার পডাশোনা করার কথা ছিল। কিন্তু বিদেশে এসে আমি কাজ করছি। পেটের দায়ে কষ্ট করছি প্রবাসে এসে। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের আল ইসলাম বলেন, প্রবাসের স্বপ্ন দেখছিলাম অনেক। কিন্তু এখন দেখি বিপরীত চিত্র।
 
দুবাইয়ের পার্ক ও স্টেশনে খোলা আকাশের নিচে শুয়ে বসে রাত কাটান শত শত বাংলাদেশি। ভিজিট ভিসায় কাজের সন্ধানে গিয়ে পড়েছেন বিপদে। আধপেটা খেয়েই শুয়ে থাকতে হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে।
 
প্রবাসী সাংবাদিক এম শহিদুল হক সোহেল বলেন, একেকটা রুমে ১৫ থেকে ২০ জন লোক থাকছেন। আর দুঃখজনক বিষয় হল, এরা অনেকেই ঠিকমতো খাবার খাচ্ছেননা। যেখানে থাকছেন সেখানের ভাড়াও দিতে পারছেন না। তখন রুমের মালিক অনেক সময় তাদের বের করে দিচ্ছেন। অনেককেই সহযোগিতা করছি সাধ্যমতো। কিন্তু সবাইকে তো আর সম্ভব হয়না সহযোগিতা করার।
 
দুবাইয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের কষ্টের কথা জানতে দেখুন টাইমস ইনভেস্টিগেশনের অনুসন্ধানী ভিডিও প্রতিবেদন।
 
####

Share this news on:

সর্বশেষ