রেলওয়ের অব্যবস্থাপনায় এই যুবক টানা অবস্থান নিয়েছেন স্টেশনে!

বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা পরিবর্তনে এবং সহজ.কম দ্বারা যাত্রী হয়রানির প্রতিবাদে ৬ দফা দাবিতে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে টানা নয় দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি।

যদিও শুরুতে তিনি অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি গণস্বাক্ষর কর্মসূচি করেন, কিন্তু পুলিশের এক সদস্যের বাধার মুখে তিনি গণস্বাক্ষর বন্ধ রেখেছেন। তবে ইতোমধ্যে রনির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে আরও কয়েকজন অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলো।

গত বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) থেকে টানা আট দিন ধরে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন রনি। 

এদিকে গত মঙ্গলবার কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে মহিউদ্দিনদের কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়েছেন ডাকসুর সাবেক জিএস ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী৷ এদিন মহিউদ্দিনরা রেলের কিছু কর্মকর্তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে দুর্নীতি ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানান।

যতদিন পর্যন্ত বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা পরিবর্তন না হচ্ছে ততদিন এখানে অবস্থান করে যাবেন জানিয়ে মহিউদ্দিন রনি বলেন, আমি রেলওয়ের সমস্যার শেষ দেখতে চাই। আল্লাহ ভরসা, দৃঢ়চিত্তে বলছি সমাধান করেই তবে বাড়ি ফিরব। প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে এখান থেকে সরে যেতে আমাকে হুমকিও দেওয়া হচ্ছে, তবে আমরা অনড়।

জানা যায়, গত ১৩ জুন বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইট থেকে ঢাকা-রাজশাহী রুটের ট্রেনের আসন বুক করার চেষ্টা করেন মহিউদ্দিন। কিন্তু মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা সংস্থা বিকাশ থেকে ভেরিফিকেশন কোড (যাচাইকরণ কোড) দিয়ে তার পিন কোড (গোপন কোড) ছাড়াই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়। মহিউদ্দিন ট্রেনের কোনো আসন পাননি, এমনকি কেন টাকা নেওয়া হলো, সে বিষয়ে কোনো ডকুমেন্টও (রসিদ) তাকে দেওয়া হয়নি। সেদিন কমলাপুর রেলস্টেশনে সার্ভার কক্ষে অভিযোগ জানালে সেখান থেকে তাকে ‘সিস্টেম ফল’ করার কথা বলা হয় এবং ১৫ দিনের মধ্যে টাকা না পেলে আবার যেতে বলা হয়৷ কিন্তু ওই মুহূর্তে ওই কক্ষে থাকা কম্পিউটার অপারেটর ৬৮০ টাকার আসন ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করেন বলে অভিযোগ মহিউদ্দিনের।

অবস্থানকারীর ৬ দফা দাবি হলো-

১. টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে সহজ.কম কর্তৃক যাত্রী হয়রানি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। হয়রানির ঘটনায় তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

২. যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধ করতে হবে।

৩. অনলাইন-অফলাইনে টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে সর্বসাধারণের সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

৪. যাত্রী চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ রেলের অবকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

৫. ট্রেনের টিকিট পরীক্ষক ও তত্ত্বাবধায়কসহ অন্যান্য দায়িত্বশীলদের কর্মকাণ্ড সার্বক্ষণিক মনিটর, শক্তিশালী তথ্য সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে রেল সেবার মান বৃদ্ধি করতে হবে।

৬. ট্রেনে ন্যায্য দামে খাবার বিক্রি, বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

Share this news on:

সর্বশেষ