ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবারের মত ফোনালাপ করলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ও রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। ওয়াশিংটনের অনুরোধে শুক্রবার দুই নেতার মধ্যে এই ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হয় বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রুশ গণমাধ্যম আরটি।
ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরুর পর দুই দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যেও এটিই প্রথম আলোচনা। ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতি ছাড়াও এতে শস্য রপ্তানি, বন্দি বিনিময়ের মত বিষয়গুলো আলোচনা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে ওয়াশিংটনে একটি সংবাদ সম্মেলনে ব্লিংকেন বলেন, দিনের শুরুতে তিনি রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সাথে আন্তরিক ও সরাসরি আলোচনা করেছেন। এ সময় তিনি রাশিয়ায় আটক দুই হাই-প্রোফাইল আমেরিকানকে মুক্তি দেওয়ার জন্য ক্রেমলিনের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, পল হুইলান ও ব্রিটনি গ্রিনারের মুক্তির বিষয়ে আমরা যে প্রস্তাব রেখেছিলাম তা গ্রহণ করার জন্য আমি ক্রেমলিনকে চাপ দিয়েছি।
ল্যাভরভের সাথে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে জানিয়ে ব্লিংকেন বলেন- রাশিয়ার হাতে আটক দুই মার্কিন বন্দিকে মুক্তির ব্যাপারে দেয়া প্রস্তাব মেনে নিতে ক্রেমলিনকে চাপ দেয়া হয়েছে।
এদিকে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কারাবন্দী রাশিয়ান এবং মার্কিন নাগরিকদের সম্ভাব্য বিনিময়ের বিষয়ে রাশিয়ান পক্ষ পরামর্শ দিয়েছে, এক্ষেত্রে পুরো প্রক্রিয়াটি পেশাদার উপায়ে পরিচালনা করতে হবে এবং অনুমানমূলক তথ্য ছুঁড়ে দেওয়ার পরিবর্তে শান্ত কূটনীতি ব্যবহারের অনুশীলনে ফিরে যেতে হবে।
ব্লিংকেন গত বুধবার বলেছেন, বাইডেন প্রশাসন মার্কিন বাস্কেটবল তারকা ব্রিটনি গ্রিনার ও সাবেক নৌবাহিনীর সদস্য পল হুইলানের মুক্তি পাওয়ার জন্য একটি যথাযথ প্রস্তাব দিয়েছে। একটি সূত্র জানিয়েছে, ওয়াশিংটন বন্দী বিনিময় চুক্তির অংশ হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারে থাকা দণ্ডিত অস্ত্র পাচারকারী ভিক্টর বাউটকে বিনিময় করতে আগ্রহী।
জানা গেছে, রাশিয়ায় আটক মার্কিন বন্দিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে তাদের পরিবার বাইডেন প্রশাসনের ওপর জন্য চাপ বাড়াচ্ছে। বিশেষ করে ১৭ ফেব্রুয়ারি মস্কো বিমানবন্দরে মাদক বহনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া দুইবারের অলিম্পিক স্বর্ণপদক বিজয়ী গ্রিনারের পরিবার ব্যাপক তদবির চালিয়ে যাচ্ছে।
ওয়াশিংটন থেকে আল জাজিরার প্রতিনিধি রোজিল্যান্ড জর্ডান বলেছেন, ব্লিংকেন ও ল্যাভরভের মধ্যে কথোপকথনকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করে যুক্তরাষ্ট্র। ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর থেকে তাদের মধ্যে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ ছিল।
জর্ডান বলেন, আমরা জানি না কী ধরনের অগ্রগতি হয়েছে, তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এই আলোচনার পর সন্তুষ্ট দেখা গেছে।