দেশে বছরে অপচয় ১৬ কোটি মানুষের তিন মাসের খাবার

যুদ্ধ, মহামারি, নিষেধাজ্ঞা, এবং জলবায়ূর বিরূপ প্রভাবের কারণে বিশ্বে খাদ্য নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিষয়টিকে আমলে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সমস্ত অনাবাদি ভূমি চাষের আওতায় নিয়ে আসার জন্য বারবার আহ্বান জানিয়েছেন।

এই খাদ্য নিরাপত্তার শঙ্কার মধ্যেও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর একটি তথ্য বেশ উদ্বেগ তৈরি করে। দেশে বছরে ১.৪৫ কোটি টন খাদ্য অপচয় হয়। যা ১৬ কোটি মানুষের তিন মাসের খাবারের সমপরিমাণ।

বাংলাদেশের পরিসংখ্যান ব্যুরো এবং জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির খাদ্য অপচয় সংক্রান্ত তথ্য বলছে, ফসলের মাঠ থেকে রান্নাঘর পর্যন্ত আসতে প্রতিবছর দেশে ৩৭ লাখ টনের বেশি খাবার নষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে, বাড়িতে খাবার অপচয়ের বার্ষিক পরিমাণ প্রায় ১.০৭ কোটি টন। বার্ষিক অপচয় ও নষ্টের মোট পরিমাণ ১ কোটি ৪৫ লাখ টন।  

সনাতন পদ্ধতিতে ফসল সংগ্রহের কারণে প্রতিবছর মাড়াই পর্যায়ে উৎপাদিত ধান, গম, ভুট্টা, আলু, নানান রকম ডাল, সরিষা, হলুদ ও মরিচের ৭.৩৩% নষ্ট হয়। পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুসারে, ২০১৮ সালে নষ্ট ও অপচয় হওয়া ফসলের বাজারমূল্য ছিল প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, শস্যক্ষেত থেকে স্থানীয় বাজার পর্যন্ত ফসল নিতে দেশের ৪৫.৭১% কৃষককে এখনো ভগ্নপ্রায় ও কাচা রাস্তা ব্যবহার করতে হয়। ফলে বিপুল পরিমাণ খাদ্যপণ্যের অপচয় হচ্ছে। অন্যদিকে মাড়াই পর্যায়ে আউশ ধানে সর্বোচ্চ ৮.৯৩% ক্ষতি হয়; আর সবচেয়ে কম ৫.৮২% ক্ষতি হয় ভুট্টায়।

এছাড়া সংরক্ষণাগারের সংকটের কারণেও দেশে বিপুল পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য অপচয় হচ্ছে। বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বেসরকারি কোল্ড স্টোরেজ আছে ৪১৪টি, যার ৯৫% সক্ষমতা ব্যবহার হয় আলু সংরক্ষণে। বাকি ৫% ফল ও মাছ সংরক্ষণে ব্যবহৃত হয়।

Share this news on:

সর্বশেষ