জীবনসঙ্গীকে হারানোর শোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান। স্ত্রী প্রিয়া রহমান মস্তিস্কে রক্তক্ষরণে মারা যাওয়ার ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সোহানও চলে যান। গতকাল বিকেলে উত্তরার বাসায় ঘুমিয়ে ছিলেন সোহান, সেটাই হয় তার শেষ ঘুম। জেগে উঠেননি আর। আজ টাঙ্গাইলের গ্রামের বাড়িতে স্ত্রীর কবরের পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন প্রখ্যাত এই নির্মাতা।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় টাঙ্গাইল পুরাতন বাসস্ট্যান্ড মসজিদে জানাজা শেষে কেন্দ্রীয় গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয় তাকে। এর আগে সোহানুর রহমানের মরদেহ তার শ্বশুরবাড়ি টাঙ্গাইল শহরের পলাশতলী এলাকায় পৌঁছায়।
স্বজনরা জানিয়েছেন স্ত্রী ও তার (সোহানুর রহমান) ইচ্ছে ছিল মৃত্যুর পর তাদের দুইজনকে যেন পাশাপাশি কবর দেওয়া হয়। সে কথা রাখতেই টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে স্ত্রীর কবরের পাশেই তাকে দাফন করা হয় তাকে।
এদিকে প্রিয় পরিচালকের মৃত্যুতে শোক নেমে এসেছে শোবিজ অঙ্গনে। গতকাল রাতেই সোহানের উত্তরার বাসায় ছুটে যান ইলিয়াস কাঞ্চন, শাকিব খান, রিয়াজ, নিপূণসহ একাধিক অভিনয়শিল্পীরা। ফেসবুকে জুড়ে নানা বাক্যে শোক জানাচ্ছেন অনেক তারকা। অপেক্ষায় ছিলেন সোহানের মরদেহ এফডিসিতে আনা হবে। তাকে এক নজর দেখবেন। কিন্তু আনা হলো না এফডিসিতে। একদিনের ব্যবধানে দুইজনের মৃত্যু হওয়ায় শোকে পাথর হয়ে আছেন নিহতের তিন মেয়ে ও স্বজন। এই পরিস্থিতিতে সোহানের তিন কন্যার একজন টাঙ্গাইল, এককজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাসায় পুরুষ মানুষ নেই, লাশের সঙ্গে একজন থাকতে হবে সেই মানুষ নেই, তারা মানুষিক ভাবে এমন অবস্থায় নেই। মরদেহ এফডিসিতে না এনে টাঙ্গাইলের গ্রামের বাড়িতে আত্মীয় স্বজনের কাছে দ্রুত নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
বহু সফল চলচ্চিত্রের নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান। তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘বিশ্বাস অবিশ্বাস’। এই নির্মাতার হাত ধরেই চলচ্চিত্রে আসেন সালমান শাহ, মৌসুমী, পপি ও ইরিন জামান। শাকিব খানের মুক্তি পাওয়া প্রথম সিনেমার পরিচালকও ছিলেন তিনি।
সোহানুর রহমান সোহান বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতিতে টানা দুবার মহাসচিব এবং দুবার সহ-সভাপতি দায়িত্ব পালন করেছেন। সোহানুর রহমান সোহান শিবলি সাদিকের সহকারী হিসেবে তার চলচ্চিত্র কর্মজীবন শুরু করেন।