দেশের প্রকৃত রিজার্ভ আরও কমলো

সপ্তাহের ব্যবধানে দেশের প্রকৃত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলার কমেছে। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতের সাপ্তাহিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া গেছে। এতে বলা হয়, গত ৫ সেপ্টেম্বর বিদেশি মুদ্রার সঞ্চায়ন ছিল ২৩ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার। তবে ১৩ সেপ্টেম্বর তা কমে ২১ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, গত মাসে মে-জুন সময়ের জন্য ১ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলারের এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) বিল পরিশোধ করা হয়েছে। এরপর জুলাই-আগস্টে আমদানি বেড়েছে। এজন্য ৫ শতাংশের বেশি হারে সুদ পরিশোধ করতে হয়। ফলে রিজার্ভ হ্রাস পেয়েছে।

আকু হলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর মধ্যে আন্তঃআঞ্চলিক লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে প্রতি ২ মাস পর পর দক্ষিণ এশিয়ার ৯ দেশের আমদানি-রপ্তানি বিল পরিশোধ করা হয়। আকুর সদস্য দেশগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত, ইরান, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, ভুটান ও মালদ্বীপ। তবে দেনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় সম্প্রতি এ তালিকা থেকে বাদ পড়েছে শ্রীলঙ্কা।

তারা আরও বলেন, আকু বিল পরিশোধের পর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ২১ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। এ দিয়ে প্রায় ৪ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব অনুসারে, বর্তমানে রিজার্ভ ২৭ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার।

গত ১৩ জুলাই প্রথম আইএমএফের সূত্র মেনে রিজার্ভের পরিমাণ প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেসময় বিদেশি মুদ্রার সঞ্চায়ন ছিল ২৩ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার। ওই সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজস্ব হিসাব মতে, দেশে সঞ্চিত অর্থ ছিল ২৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার।

ইতোমধ্যে বাংলাদেশকে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে আইএমএফ। যার অন্যতম শর্ত ছিল বিপিএম-৬ ফর্মুলা মেনে বাংলাদেশ ব্যাংককে রিজার্ভ গণনা করতে হবে। সেই হিসাব ধরে চলতি বছরের জুনে দেশের আসল রিজার্ভ প্রকাশ করার কথা ছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। তবে জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে সেই শর্তের আলোকে সেটা প্রকাশ করে তারা।

গত এক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে। আমদানি নিয়ন্ত্রণে একাধিক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবু মূলত রেমিট্যান্স প্রবাহে ধীরগতির কারণে রিজার্ভ কমছে।

Share this news on: