অস্বাভাবিক হৃদকম্পন নির্ণয় করার মাধ্যমে মানুষের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করবে অ্যাপল ওয়াচ অ্যাপ। অস্বাভাবিক হৃদকম্পন হচ্ছে- এমন একটি স্বাস্থ্য পরীক্ষা, যা হার্টের অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশন (এএফআইবি) পরিস্থিতি সনাক্ত করে।
এএফআইবি এমন একটি অবস্থা, অধিকাংশ সময়ই যার কোনো উপসর্গ দেখা যায় না বলে এটা আগে থেকে সনাক্ত করা সম্ভব হয় না। অথচ বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ লোক এই রোগে মারা যাচ্ছে।
বিখ্যাত অ্যাপল প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে পরিচালিত এক গবেষণায় এ তথ্য ওঠে এসেছে।
যদিও গবেষণাটি এখনও কোনো জার্নালে প্রকাশিত হয়নি। তবে সম্প্রতি নিউ অর্লিন্স আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলোজি সায়েন্টিফিক সেশনে উপস্থাপিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ দাবি করা হয়।
স্ট্যানফোর্ড মেডিক্যাল স্কুলের কার্ডিওভাসকুলার মেডিসিনের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিন্টু তোরাখিয়া এক মন্তব্যে বলেন, অ্যাপল ওয়াচ অ্যাপের মাধ্যমে কীভাবে হার্টের অবস্থা (এএফআইবি) সনাক্ত করা যায়, তা অনুধাবন করতে এই গবেষণার ফলাফল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কীভাবে একটি মোবাইল অ্যাপের সাহায্যে হৃদকম্পন বা হার্টের এএফআইবি অবস্থা সনাক্ত করা যায়, তা আবিষ্কার করতে তোরাখিয়া ও অন্যান্য গবেষকরা মিলে প্রায় চার লাখেরও বেশি অংশগ্রহণকারীর ওপর এই গবেষণাটি করেছেন।
অংশগ্রহণকারীদের সবারই ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাফি (ইসিজি) ফিচার বিশিষ্ট আইফোন ও অ্যাপল ওয়াচ দুটিই ছিল।
গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যারা অ্যাপল ওয়াচ অ্যাপ ব্যবহার করে অস্বাভাবিক হৃদকম্পন সনাক্ত করতে পেরেছিল তাদের ৩৪ শতাংশেরই অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশন (এএফআইবি) পরিস্থিতি ছিল।
দীর্ঘমেয়াদী ইসিজি রেকর্ডিং-এর সঙ্গে অ্যাপল ওয়াচের হৃদকম্পন নির্ণয় প্রক্রিয়ার তুলনা করে দেখা যায়, অ্যাপল ওয়াচ কর্তৃক হৃদকম্পন সনাক্তকরণে ৭১ শতাংশ পজিটিভ মান পাওয়া গেছে। অন্যদিকে মাত্র ২৯ শতাংশ ব্যবহারকারী ভুল মান পেয়েছেন বলে গবেষণায় দেখা গেছে।
তাছাড়া, যারা অস্বাভাবিক হৃদকম্পন সনাক্ত করেছিল, তাদের ৫৭ শতাংশ মেডিক্যাল থেকে চিকিৎসা সেবা নিয়েছিলেন বলে ওই গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
স্ট্যানফোর্ড মেডিক্যাল স্কুলের কার্ডিওভাসকুলার মেডিসিনের সহযোগী অধ্যাপক ড. মার্কো প্যারেজ বলেন, এই গবেষণায় অ্যাপল ওয়াচের যে ভূমিকা ও কার্যকারিতা দেখা গেছে, তা প্রমাণ করে স্বাস্থ্য সেবায় ওয়্যারেবল প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
টাইমস/ইএইচ/জিএস