শিশুকে হাসিখুশি রাখার জন্য যা করবেন

সন্তানের খুশির জন্য মা বাবার ত্যাগের অনেক দৃষ্টান্ত চারপাশেই পাবেন। শিশুর মুখে হাসি ধরে রাখার জন্য অনেক বেশি ত্যাগ করার কোনো প্রয়োজন নেই, বরং আপনার কিছু স্বাভাবিক কাজই পারে এটি সত্যি করতে। অনেক সময় মা-বাবা না বুঝেই এমনকিছু আচরণ করেন যা শিশুর মনে গভীরভাবে প্রভাব ফেলে। তাই নিজের প্রতিটি আচরণ বা কাজের দিকে নজর দিন। আপনার সন্তান যেহেতু আপনারই অংশ, তাই আপনার সবকিছুর প্রভাব তার মাঝেও পড়বে। চলুন জেনে নেওয়া যাক শিশুকে হাসিখুশি রাখতে আপনি কী করতে পারেন-

জড়িয়ে ধরুন

ভাবছেন, এ আবার কী কথা! মা-বাবা তার সন্তানকে তো জড়িয়ে ধরবেই, এটি আলাদা করে বলা কী আছে! কিন্তু আপনি হয়তো জানেন না আপনার ছোট্ট এই কাজ শিশুকে কতটা আনন্দিক করে। শিশুর সঙ্গে ‘জাদু কি ঝাপ্পি’র চেয়ে ভালো আর কী হতে পারে! এটি শিশুর মনে দারুণ প্রভাব ফেলবে। আপনাদের বন্ধন আরও দৃঢ় করবে। তাই সুযোগ পেলেই সন্তানকে জড়িয়ে ধরুন।

বলুন যে আপনি তাকে ভালোবাসেন

প্রত্যেক মা-বাবাই সন্তানকে ভালোবাসেন এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু ভালোবাসা আর মুখে জানান দেওয়ার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। অনেক সময় মুখে না বললে অনেক বিষয় স্পষ্ট হয় না। তাই সন্তানকে প্রতিদিন বলুন যে আপনি তাকে ভালোবাসেন। এতে উষ্ণ হাসি তার সুন্দর মুখ জুড়ে ছড়িয়ে পড়বে, আপনার সন্তানের বয়স যাই হোক না কেন।

তার প্রচেষ্টার প্রশংসা করুন

শিশুর অনেক প্রচেষ্টা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে নাও হতে পারে। কিন্তু তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্বকে দেখতে করুন। তাদের সামান্য কাজের জন্যও প্রশংসা করা গুরুত্বপূর্ণ। এটি তার ইতিবাচক শক্তি বৃদ্ধি করবে। এতে আপনার সন্তান আরও বেশি সদয় হবে এবং ইতিবাচক কাজের পথে এগিয়ে যাবে।

তারা ব্যর্থ হলেও উৎসাহ দিন

ব্যর্থতা জীবনের একটি অংশ। এর কারণে কিছুক্ষণ মন খারাপ করা স্বাভাবিক, কিন্তু সেজন্য থেমে থাকলে চলবে না। ব্যর্থতা থেকে সাফল্যের পথে ওঠার ক্ষমতা অর্জন করতে হবে। একাডেমিকভাবে, খেলাধুলা, রান্নায় বা অন্য কিছুতে আপনার সন্তান ব্যর্থ হলেও তাকে বলুন যে তার প্রতি আপনার বিশ্বাস আছে। তাকে ভুল থেকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন এবং আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে শেখান।

বন্ধুর মতো একসঙ্গে খেলুন

খেলা শিশুর বিকাশের একটি অপরিহার্য অংশ। সেইসঙ্গে এটি আপনার সঙ্গে তার বন্ধনের একটি দুর্দান্ত উপায়। মেঝেতে নামুন এবং তাদের কল্পনাপ্রসূত খেলাগুরোতে যোগ দিন, লেগো ব্লক তৈরি করুন, তার পুতুলগুলোর সঙ্গে টি পার্টি করুন, শিশুকে নিয়ে পার্কে ঘুরে আসুন। খেলার সময় আপনার সক্রিয় অংশগ্রহণ শিশুর মনে সুন্দর স্মৃতি তৈরি করবে।

কষ্ট দিলে সরি বলুন

মা-বাবা মানেই নিখুঁত নয়। তাদেরও অনেক ভুল থাকতে পারে। হয়তো আপনি অল্পতেই শিশুর ওপর রেগে যেতে পারেন বা মেজাজ হারাতে পারেন। সন্তানকে শাসন অবশ্যই করবেন। কিন্তু আপনার যদি মনে হয় যে তাকে অপরাধের তুলনায় শাস্তি বেশি দেওয়া হয়ে গেছে তাহলে সরি বলুন। মা-বাবা হলে যে সন্তানকে সরি বলা যাবে না, এমন নয়। আপনার এই আচরণ দেখে সে নিজেও ভুল স্বীকার করতে শিখবে।

Share this news on: