ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দুই শিশু নিহত , গুরুতর পরিণতির হুঁশিয়ারি পাকিস্তানের

পাকিস্তান বলছে, মঙ্গলবার প্রতিবেশী ইরানের হামলায় দুই শিশু নিহত ও তিনজন আহত হয়েছে।

ইরান বলছে, তারা জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ আল-আদলের সঙ্গে যুক্ত দুটি ঘাঁটি লক্ষ্যবস্তু করেছে, দেশটির সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত একটি সংবাদ সংস্থা এ কথা বলা হয়েছে। খবর বিবিসির।

তবে পাকিস্তান এটি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, এটি একটি ‘বেআইনি কাজ’, যা ‘গুরুতর পরিণতি’ হতে পারে।

ইরাক ও সিরিয়ার পর পাকিস্তান তৃতীয় দেশ যেটি গত কয়েকদিনের মধ্যে ইরানি হামলার শিকার হয়েছে।

পাকিস্তানে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রায় নজিরবিহীন। মঙ্গলবারের হামলাটি দুই দেশের সীমান্তবর্তী বেলুচিস্তানের বিশাল দক্ষিণ-পশ্চিম প্রদেশের একটি গ্রামে আঘাত হানে।

কঠিন ভাষায় এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘ইরান কর্তৃক তার আকাশসীমার অপ্রীতিকর লঙ্ঘনের’ তীব্র নিন্দা করেছে।

বিবৃতিতে এ ঘটনাকে ‘সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য’ বলে অভিহিত করা হয়। বলা হয়েছে, ‘পাকিস্তান ও ইরানের মধ্যে যোগাযোগের বেশ কয়েকটি চ্যানেল থাকা সত্ত্বেও এই বেআইনি কাজটি সংঘটিত হয়েছে।’

পাকিস্তান তেহরানে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে একটি প্রতিবাদ জানিয়েছে। বলেছে যে ‘পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের এই নির্মম লঙ্ঘন এবং এর পরিণতির দায় ইরানের উপরই বর্তাবে’।

ইরান সোমবার ইরাকের উত্তরের শহর ইরবিলে লক্ষ্যবস্তুতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছিল।

৭ অক্টোবর ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে তীব্র উত্তেজনার মধ্যে এই ইরানি হামলার ঘটনা ঘটল।

ইরান ঘোষণা করেছে যে তারা বৃহত্তর সংঘাতে জড়াতে চায় না। কিন্তু তার তথাকথিত ‘প্রতিরোধের অক্ষ-এর দলগুলো ফিলিস্তিনিদের সাথে সংহতি প্রদর্শনের জন্য ইসরায়েল ও তার মিত্রদের ওপর হামলা চালিয়ে আসছে।

লেবাননের হিজবুল্লাহ আন্দোলন ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে আন্তঃসীমান্ত গোলাগুলি করেছে; শিয়া মিলিশিয়ারা ইরাক ও সিরিয়ায় মার্কিন বাহিনীর ওপর ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে; এবং ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে জাহাজে হামলা চালিয়েছে।

ইসরায়েলের হামলা চালিয়ে লেবাননে একজন হামাস নেতা এবং সিরিয়ায় একজন বিপ্লবী গার্ড কমান্ডারকে হত্যা করেছে, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে বিমান হামলায় একজন ইরাকি মিলিশিয়া নেতাকে হত্যা করেছে এবং ইয়েমেনে হুতি লক্ষ্যবস্তুতে বোমা হামলা করেছে।
পাকিস্তান ও ইরান অল্প জনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে কয়েক দশক ধরে সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে যুদ্ধ করছে, যার মধ্যে রয়েছে জইশ আল-আদল।

তাদের সীমান্তের উভয় পাশের নিরাপত্তা, যা প্রায় ৯০০ কিলোমিটার (৫৫৯ মাইল), উভয় সরকারের জন্য দীর্ঘকাল ধরে উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তেহরান গত মাসে সীমান্তের কাছাকাছি হামলার সঙ্গে এই গোষ্ঠীটি যুক্ত বলে জানিয়েছে, যাতে এক ডজনেরও বেশি ইরানি পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়।

এ সময় ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমাদ ওয়াহিদি বলেন, দায়ী জঙ্গিরা পাকিস্তান থেকে দেশে প্রবেশ করেছে।

মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালকের অফিস অনুসারে, জাইশ আল-আদল হল সবচেয়ে সক্রিয় এবং প্রভাবশালী সুন্নি সশস্ত্র গোষ্ঠী যা সিস্তান-বেলুচিস্তানে কাজ করছে,

Share this news on: