রাশিয়ায় কনসার্ট হলে বন্দুক হামলায় নিহত ৬০

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর একটি কনসার্ট হলে বন্দুকধারীদের নির্বিচার গুলিবর্ষণে কমপক্ষে ৬০ জন নিহত এবং শতাধিক লোক আহত হয়েছে। হামলায় কনসার্ট হলটিতে আগুন ধরে যায়। জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। খবর এএফপির।

জানা গেছে, হামলাকারীরা কেমোফ্লেজ ইউনিফর্ম পরে কনসার্ট ভবনটিতে প্রবেশ করে গুলি করতে শুরু করে। এ ছাড়া তারা গ্রেনেড ও আগুন বোমা ছুড়ে মারে। বার্তা সংস্থা আরআইএ নভোস্তির সাংবাদিকরা এ তথ্য জানিয়েছেন।

মস্কোর উত্তরাঞ্চলীয় উপকণ্ঠ ক্রাসনোগরস্ক এলাকার ক্রকাস সিটি কনসার্ট হলে চালানো এই হামলায় আগুন খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, পুরো ভবন ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। দর্শনার্থীরা এ সময় চিৎকার করে জরুরি নির্গমন দরজার দিকে ছুটে যায়।

এলেক্সি নামে একজন সঙ্গীত প্রযোজক জানান, রক গানের কনসার্টটি শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ আগে তিনি গুলিবর্ষণের শব্দ এবং অনেক মানুষের চিৎকার শুনতে পান। তিনি বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছিলাম অটোমেটিক রাইফেলে গুলিবর্ষণের মাধ্যমে হামলা হচ্ছে এবং সবচেয়ে খারাপ যেটা, তা হলো এটি একটি সন্ত্রাসী হামলা।’

এলেক্সি আরও বলেন, ‘সব লোকই বের হওয়ার জরুরি দরজাগুলোর দিকে ভিড় করছিলেন এবং এতে সেখানে প্রচণ্ড ঠাসাঠাসির সৃষ্টি হয়। এমনকি, লোকেরা একে অন্যের মাথার ওপর দিয়ে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছিলেন।’

রাশিয়ার এফএসবি নিরাপত্তা সার্ভিস জানায়, এ ঘটনায় মোট ৬০ জন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে আরও শতাধিক লোক।

রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাস্কো বলেন, ১১৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরমধ্যে পাঁচজন শিশু রয়েছে, যাদের একজনের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। ১১০ জন পূর্ণবয়স্ক লোকের মধ্যে ৬০ জনের অবস্থা গুরুতর।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সন্ত্রাসী ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে প্রতিটি ঘটনার সর্বশেষ পরিস্থিতি জানানো হচ্ছে। প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ রুশ বার্তা সংস্থাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

রাশিয়ার ন্যাশনাল গার্ড জানিয়েছে, তারা ঘটনাস্থলে আছে এবং দুষ্কৃতকারীদের খুঁজে বের করতে অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনার পর থেকেই পুলিশকে গন্ধ শুঁকে অপরাধী শনাক্ত করতে পারে, এমন কুকুর নিয়ে তল্লাশি চালাতে দেখা গেছে।

এদিকে ইসলামিক স্টেট (আইএস) জানিয়েছে, তাদের যোদ্ধারা মস্কোর উপকণ্ঠে একটি বড় জামায়েতে হামলা চালিয়েছে এবং হামলাকারীরা তাদের আস্তানায় নিরাপদে ফিরে এসেছে।

Share this news on: