বাড়ছে তাপপ্রবাহের তীব্রতা, টিউবওয়েলে উঠছে না পানি

ঝিনাইদহে বাড়ছে তাপপ্রবাহের তীব্রতা। জনজীবন সেই তাপপ্রবাহে পুড়ছে। বেশ কয়েকটি নদ-নদীর পানি শুকিয়ে গেছে। ভুর্গভস্থ পানির স্তর নেমে গেছে। সদর উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের বেশিরভাগ অগভীর নলকূপ এবং টিউবওয়েলে পানি উঠছে না।

জেলা শহরের দক্ষিণাঞ্চল শৈলকুপা, কালীগঞ্জ ও সদর উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলে খরার প্রভাবে নিচে চলে গেছে পানিরস্তর। এতে মাঠের ফসল পুড়ে যাচ্ছে। ফুল ও ড্রাগন চাষ চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। কিছু কিছু এলাকায় খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। পাখির কলতান থমকে গেছে। তাপপ্রবাহের বিরূপ প্রভাব পড়েছে সর্বত্র। বাজারের শাকসবজির দাম বাড়তি। মধ্যবিত্তরা সংসার চালাতে হাফিয়ে উঠছে।

দুপুর হলেই তাপমাত্র বাড়তে থাকে। মহাসড়কগুলোর পিচ গলতে শুরু করে। প্রচণ্ড তাপে যানবাহন চলাচল কমে গেছে। কয়েকজন গাড়িচালকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উত্তপ্ত সড়কে যানবাহনের চাকা ব্লাস্ট হচ্ছে। দিনের বেলায় যানবাহন চালাতে পারছে না তারা।

চলামান তাপদাহের কারণে দোকানপাট সময় মতো খুলছে না। কর্মহীন হয়ে পড়েছে রিকশা ও ইজিবাইকচালকরা। যাত্রী হচ্ছে না তাদের। দিনমজুররা অসহায় হয়ে পড়েছে। তাপপ্রবাহের কারণে অতিষ্ঠ তারা। কাজের সুযোগ কমে গেছে তাদের। গাছের তলে চায়ের দোকানে অলস সময় কাটছে তাদের। শরীরের চামড়ায় ফুসকা পড়ছে। তাপ সহ্য করতে পারছে না শিশু ও বৃদ্ধরা। নাভিশ্বাস উঠে গেছে তাদের। দুপুর হতে না হতেই শহরের সড়কগুলো ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। গরম বাতাস জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলছে।

জেলা তথ্য অফিসের পক্ষ থেকে আজ সোমবার দুপুর থেকে জনগণকে বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের না হতে অনুরোধ করে মাইকিং করা হয়েছে।

প্রচণ্ড গরমে তেষ্টা মেটাতে পথচারীদের পাশে দাঁড়িয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কর্মীরা। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত স্থানীয় পুরাতন ডিসি কোর্টের সামনের রাস্তায় পথচারীদের স্যালাইন পানি পান করাছে তারা। পাশাপাশি হ্যান্ড মাইকে সচেতনতামুলক প্রচারণা চালাচ্ছে তারা। রিকশাচালক দিনমজুর পথচারীরা তাদের কাছ থেকে বিনামূল্যে স্যালাইন পানি পান করে তৃপ্ত হচ্ছে।

সবুজ গাছপালা ধ্বংস এবং জেলার নদ-নদীগুলো ভরাট করে দখলবাজদের হাতে চলে যাওয়ায় দিন দিন জেলার আবহাওয়া পাশের জেলার চুয়াডাঙ্গার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

Share this news on: