বদি নয়, এবার নৌকার মাঝি বৌদি

আলোচিত সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদিকে এবার মনোনয় দেয়নি আওয়ামী লীগ। তবে তার স্ত্রী শাহীনা আক্তার চৌধুরীকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।

রোববার চূড়ান্তভাবে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার স্বাক্ষরিত চিঠি তিনি পেয়েছেন। কিন্তু তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী শাহীনা আক্তারের স্ত্রীকে মনোনয়ন দেয়াতে এলাকায় জুড়ে বইছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মনোনয়নপ্রাপ্ত শাহীনা আক্তার চৌধুরী শুধুই সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির স্ত্রী নয়। উখিয়ার একটি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান তিনি। তার বাবা নুরুল ইসলাম চৌধুরী ছিলেন উখিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। শুধু তাই নয়, জেলা পরিষদের নির্বাচনে সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন তার বড় ভাই হুমায়ুন কবির চৌধুরী। এছাড়াও তার ছোটভাই জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।

শাহীনা আক্তার চৌধুরীর চাচা হামিদুল হক চৌধুরী উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও উখিয়া বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত রয়েছেন তিনি।

দলীয় সূত্র আরো জানায়, শাহীনা আক্তার ২০০৮ সালের নির্বাচনেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার জন্য মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত ওই নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছিলেন। তবে সেই সময় তার স্বামী আবদুর রহমান বদি নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয় অর্জন করেন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের নির্বাচনেও বদি ফের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। টানা সংসদ সদস্য হয়ে বিএনপির দুর্গ নামে পরিচিত ওই আসনটিকে বির্তকিত করে তুলেন বদি। তাই এবার তাকে দলীয় মনোয়ন দেয়নি আওয়ামী লীগ।

তবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার পর শাহীনা আক্তার চৌধুরী সাংবাদিকের বলেন, ‘আমি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নৌকার মনোনয়ন দিয়েছেন, নৌকাকে বিজয়ী করার জন্য যা করার সব করবো।’

কে সেই বদি:
আবদুর রহমান বদি সংসদ সদস্য হওয়ার পর থেকে সরকারি সুযোগ-সুবিধায় দাপিয়ে বেড়ান দেশ-বিদেশে। সভা-সেমিনারে দেশ ও দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে বক্তব্য রাখেন। আর ওই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তিনি আন্তর্জাতিক মাদক কারবারিদের সঙ্গেও সখ্যতা গড়ে তোলেন। এমনকি মাদক সাম্রাজ্যে এমপি বদি ‘মেজভাই’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। দক্ষিণ এশিয়ায় ওই জগতের সবাই তাকে ‘মেজভাই’ হিসেবেই চিনে।

জানা গেছে, এরশাদ সরকারের সময় আবদুর রহমান বদির বাবা এজাহার মিয়া ছিলেন টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান। তবে এরশাদ সরকারের পতনের পর বদি বিএনপির রাজনীতিতে যোগ দেন। তবে ১৯৯৬ সালে জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন চেয়ে বসেন তিনি। কিন্তু সে সময় বিএনপির হাইকমান্ড বদিকে মনোনয়ন দেয়নি। পরে আওয়ামী লীগে যোগ দেন বদি। এরপর ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে জয় ছিনিয়ে আনেন বদি। টেকনাফে শুরু হয় বদির শাসন। হয়ে ওঠেন অন্ধকার জগতের মুকুটহীন সম্রাট।

Share this news on:

সর্বশেষ