খুলনার কবি কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার ইনস্টিটিউট

‘যে জন দিবসে মনের হরষে জ্বালায় মোমের বাতি’ কিংবা ‘চিরসুখী জন ভ্রমে কি কখন ব্যথিত বেদন বুঝিতে পারে’ কিংবা ‌আশু গৃহে তার দেখিবে না আর নিশীথে প্রদীপ ভাতি'। বিখ্যাত এই চরণদ্বয়ের রচয়িতা কবি, সাংবাদিক ও শিক্ষক কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার।

বিভিন্ন কবি ও সাহিত্যিক তাদের লেখনীর মাধ্যমে বাংলা সাহিত্য ভাণ্ডারকে করছেন সমৃদ্ধ। যার কারণে আমরা পেয়েছি একটা বৃহৎ সাহিত্যভাণ্ডার। কবি কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার ছিলেন এমনই একজন কবি যিনি বাংলার সাহিত্য ভাণ্ডারকে তার লেখনীর মাধ্যমে সমৃদ্ধ করেছেন।

কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার ১৮৩৪ সালে ভৈরব নদের তীরে খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটিতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৮৬১ সালে তার বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ 'সদ্ভাব শতক' প্রকাশ হয়। এ ছাড়া আরও কয়েকটি গ্রন্থ রচনা করেন তিনি। কবিতা লেখার পাশাপাশি শিক্ষকতা ও সাংবাদিকতা করেছেন কৃষ্ণচন্দ্র। 'ঢাকা প্রকাশ' পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন তিনি। শিক্ষকতা করেছেন ১৯ বছর। ১৯০৭ সালের ১৩ জানুয়ারি পরপারে পাড়ি জমান বাংলা সাহিত্যের এই অমর কবি।

এই কবির স্মৃতিবিজড়িত স্থান কবি কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার ইনস্টিটিউট জাদুঘর। কবির স্মৃতির উদ্দেশ্যে দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি গ্রামে ১৯১৪ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় এই ইনস্টিটিউট। যেখানে স্থান পেয়েছে কবির ব্যবহার্য জিনিসপত্র।

ইনস্টিটিউট জাদুঘরে রয়েছে অনেক দুর্লভ ও মূল্যবান গ্রন্থ। কুমুদ বন্ধু স্মৃতি মন্দিরের সামনে ভৈরব নদীর কাছে একটি স্মৃতিস্তম্ভ রয়েছে। এ ছাড়াও জাদুঘরে কবির স্মৃতিবিজড়িত বই এবং ব্যবহার্য জিনিসপত্র। তবে অভিযোগ রয়েছে, অযত্ন ও অবহেলায় কবির স্মৃতিবিজড়িত এই স্থানটুকু বর্তমানে বিলীনের পথে।

যেভাবে যাওয়া যায়:

খুলনা শহর থেকে যে কোন যানবাহনে খান জাহান আলী সেতু-তে যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে সরাসরি সড়কপথে খুলনায় যেতে পারবেন। ঢাকা ও খুলনার মধ্যে চলাচলকারী বাসগুলোর মধ্যে রয়েছে- হানিফ এন্টারপ্রাইজ, গ্রিন লাইন, ঈগল পরিবহন ইত্যাদি। ভাড়া শ্রেণিভেদে ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা।

এছাড়া রেলযোগেও খুলনা যাওয়া যায়। এজন্য ঢাকা থেকে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও চিত্রা এক্সপ্রেস নামে দুটি আন্তঃনগর ট্রেন রয়েছে।

খুলনা জেলা সদর থেকে সড়কপথ বা নদীপথে সেনহাটি বাজার আসা যায়। এছাড়া দিঘলিয়া উপজেলা থেকে সড়কপথে ভ্যান/ইজিবাইক যোগে সেনহাটি বাজারে আসা যায়।

থাকার সুবিধা:

থাকার জন্য খুলনায় রয়েছে বেশ কিছু আবাসিক হোটেল। তাদের মধ্যে কয়েকটি হলো- সিএসএস রেস্ট হাউজ (০৪১-৭২২৩৫৫), হোটেল ক্যাসেল সালাম (০৪১-৭৩০৭২৫), হোটেল রয়্যাল ইন্টারন্যাশনাল (০৪১-৮১৩০৬৭-৯), প্ল্যাটিনাম জুট মিলস লিমিটেড রেস্ট হাউজ (০৪১-৭৬২৩৩৫), এলজিইডি রেস্ট হাউজ (০৪১৭২৩১৮৩)।

 

টাইমস/এসআর/এইচইউ

Share this news on: