ঈশ্বরদীতে শেখ হাসিনার ট্রেনে গুলি: বিএনপির ৩০ নেতাকর্মীর জামিন বাতিল

পাবনার ঈশ্বরদীতে বিএনপি সরকারের সময়ে শেখ হাসিনার ট্রেনবহরে গুলিবর্ষণের মামলায় বিএনপির ৩০ নেতাকর্মীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

রোববার পাবনার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-১ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক রুস্তম আলী আসামিদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।

চাঞ্চল্যকর এ মামলায় বিএনপির ৫২ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। এদের মধ্যে ৩০ জন আজ আদালতে হাজির হয়ে জমিন আবেদন করেন। তবে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদের জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। এ সময় পলাতক ২২ বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন পিপি আক্তারুজ্জামান মুক্তা। অন্যদিকে আইনজীবি নুরুল ইসলাম গ্যাদাসহ কয়েকজন আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন।

পিপি আক্তারুজ্জামান মুক্তা জানান, পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক রুস্তম আলীর উপস্থিতিতে আগামীকাল সোমবার সকাল ১০টায় এ মামলায় যুক্তিতর্ক শুরু হবে। যুক্তিতর্ক শেষ হলে রায় ঘোষণা করা হবে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় কর্মসূচিতে ট্রেনবহর নিয়ে রেলপথে খুলনা থেকে ঈশ্বরদী হয়ে সৈয়দপুর যাচ্ছিলেন। পথে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে ট্রেনটি প্রবেশের মূহুর্তে অতর্কিতে ওই ট্রেন ও শেখ হাসিনার কামরা লক্ষ্য করে উপর্যুপরি গুলিবর্ষণ করা হয়। স্টেশনে ট্রেনবহর যাত্রা বিরতি করলে আবারও হামলা হয়। এ ঘটনায় দলীয় কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করে শেখ হাসিনা দ্রুত ঈশ্বরদী ত্যাগ করেন। পরে রেলওয়ে পুলিশ বাদী হয়ে তৎকালীন ছাত্রদল নেতা ও বর্তমানে ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুসহ সাতজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। সেসময় সরকারে ছিল বিএনপি এবং প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর পুলিশ মামলাটি পুনঃতদন্ত করে। তদন্ত শেষে নতুন করে ঈশ্বরদীর বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ ৫২ জনকে এই মামলার আসামি করা হয়। মামলাটি দায়েরের পরের বছর এই মামলায় পুলিশ কোনও সাক্ষী না পেয়ে আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্টও দাখিল করে। কিন্তু, আদালত সে রিপোর্ট গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের জন্য মামলাটি (এসটি ৪২/৯৭) সিআইডিতে পাঠান। পরে সিআইডি তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।

প্রথম চার্জশিটের সাত আসামির বাইরে এ মামলায় যাদের নতুনভাবে আসামি করা হয়, তারা হলেন- ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মকলেছুর রহমান বাবলু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র শামসুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন বিশ্বাস, পাবনা জেলা বিএনপির মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক কেএম আক্তারুজ্জামান আক্তার, পাকশীর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, সাহাপুরের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নেফাউর রহমান রাজু, সাবেক ছাত্রনেতা মাহবুবুর রহমান পলাশ, রেজাউল করিম শাহীন, আজিজুর রহমান শাহীন, সেলিম আহমেদ, পৌরসভার কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন জনি, বিএনপি নেতা ইসলাম হোসেন জুয়েল, শহীদুল ইসলাম অটল, আব্দুল জব্বার প্রমুখ।

আসামিদের মধ্যে গত ২৫ বছরে ওসিয়া, আলী আজগর, খোকন, তুহিন ও আলমগীরসহ ৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: