নিষ্ক্রিয় জীবনযাপনে শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেশি

বিশ্বব্যাপী শিশুরা খুবই নিষ্ক্রিয় (ক্রিয়াহীন বা অলস) জীবনযাপন করছে। ফলে তাদের যথাযথ স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও বিকাশ হচ্ছে না। শারীরিকভাবে নিষ্ক্রিয় শিশুরা মারাত্মক শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও বুদ্ধিভিত্তিক স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে বেড়ে উঠছে।

সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘অ্যাক্টিভ হেলথি কিডস গ্লোবাল এলায়েন্স’ এর এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য ওঠে এসেছে।

সংস্থাটির চেয়ারম্যান ও কানাডার অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মার্ক ট্রিম্বলে বলেন, শারীরিকভাবে সক্রিয় জীবনযাপন না করায় ভবিষ্যতে এই প্রজন্মের শিশুদেরকে জলবায়ু পরিবর্তন, বিশ্বায়ন ও প্রযুক্তির বিকাশের প্রভাবসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে।

ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি অ্যান্ড হেলথ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় ৬টি মহাদেশের ৪৯টি উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের শিশুদের শারীরিক সক্রিয়তা নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

ফলাফলে দেখা যায়, স্লোভেনিয়া, জিম্বাবুয়ে ও জাপানের শিশু-কিশোরদের শারীরিক সক্রিয়তা সবচেয়ে বেশি।

এছাড়া গবেষণায় দেখা যায়, প্রতিদিন গড়ে অন্তত এক ঘণ্টা শারীরিকভাবে সক্রিয় জীবনযাপন করেন এমন শিশুদের সংখ্যা মাত্র ৪১.৭ ভাগ।

গবেষকরা বলেন, একটি সক্রিয় জীবনযাপনের ফলেই শিশুদের শারীরিক সক্রিয়তা বৃদ্ধি পায় যা তাদের দৈনন্দিন জীবন যাপনের জন্য অপরিহার্য।

শিশুদের ভবিষ্যৎ স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও বিকাশের জন্য প্রতিটি সমাজেই শিশুদের শারীরিক সক্রিয়তা বাড়াতে হবে। এজন্য শিশুদের গতিশীলতা বাড়াতে সামাজিক নিয়ম-কানুন ও জীবনযাপনের অভ্যাসের পরিবর্তন করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

এদিকে এই প্রথমবারের মত বৈশ্বিক কোন গবেষণায় বাংলাদেশের শিশুদের জীবনযাপনের বিষয়টি ওঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শিশুদের যথাযথ বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ শারীরিক কর্মকান্ড করা প্রয়োজন। অথচ বাংলাদেশের প্রতি পাঁচ শিশুর তিনজনই এটা করছে না।

শিশুদের এই নিষ্ক্রিয় জীবনযাপন বাংলাদেশের শিশুদের সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। তাই বাংলাদেশের শিশুদের সক্রিয়তা বাড়াতে বেশি বেশি খেলাধুলা ও শারীরিক কর্মকান্ড বাড়ানো উচিত বলে গবেষকরা মনে করছেন।

একই সঙ্গে প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শিশুদের সক্রিয় জীবনযাপনকে গুরুত্ব দিয়ে একটি কার্যকর জাতীয়নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

 

 টাইমস/এএইচ/জিএস

Share this news on: